রোকন হারুন
আওয়ার ইসলাম
আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ধর্মীয় ভাব-আবেগ ও গম্ভীর্যের মাধ্যমে চলছে মজলিসে দাওয়াতুল হকের ২৪তম কেন্দ্রীয় ইজতেমা।
আজ শনিবার বাদ ফজর থেকে যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়ায় (যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসা) দিনব্যাপী এ ইজতেমা শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, দাওয়াতুল হকের ইজতেমায় বাংলাদেশের সব জেলা থেকে আলেম ওলামারা এসেছেন। আমি এসেছি আপনাদের সাথে সাক্ষাত করার জন্য। এখানে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি আশা করি আল্লাহ তায়ালা এখানে আসার ওছিলায় আমাকে ক্ষমা করবেন।
তিনি বলেন, ছোটবেলায় মাদরাসায় পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। হজরত শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর মাদরাসায় ছাত্র হিসেবে কিছুকাল তার সোহবতে ছিলাম। তিনি আমার প্রিয় উস্তাদ। আমি আলেমদের মাথার মুকুট মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসানের বয়ান শোনার জন্য এসেছি। সুন্নত সম্পর্কে তার বয়ানে আমি আপ্লুত হয়েছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সুন্নতের ওপর আমল করার তাওফিক দিন।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য হলো কেবল আলেম ওলামাদের সংস্পর্শে এসে নিজেকে পবিত্রতার রঙে রাঙানো। সব সময়েই আলেম ওলামাদের সংস্পর্শে থাকতে চাই। আপনারা সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। সাথে সাথে চেষ্ট করব, আমার যতটুকু ক্ষমতা আছে সে অনুযায়ী ভাল কাজ করার। কোন দল বা ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য নয় কেবল আল্লাহকে খুশি করার জন্য দীনি কাজ করে যেতে চাই।
শেখ আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আমার হুযুর শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর মাযার যিয়ারত করার পর মন্ত্রীত্বের চেয়ারে বসি। মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর খুব ভয়ে ছিলাম, জানি না কোন রকমের ফাইল আসে আমার কাছে। আল্লাহর ফায়সালা, আমার কাছে প্রথম ফাইল আসে তাবলিগের। তখন কোন কিছু চিন্তাভাবনা না করে কেবল আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যে সে ফাইলে সই করি।
ধর্ম মন্ত্রণালয় পবিত্র জায়গা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্মমন্ত্রণালয়ে কোন দুর্নীতি রাখতে চাই না। আমি ওয়াদা করছি, আমি নিজেও কোন দুর্নীতি করব না।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে হজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দিয়েছেন। মুসলমানদের পবিত্র জায়গা মক্কা-মদিনা। আর হজ হল মুসলমানদের একটি ফরজ বিধান ও দীনের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। হজের সফরে হাজিদের যেন কোন রকম জটিলতা, কষ্ট ও ভোগান্তি না হয় আমরা সেই বিষয়ে তৎপরতা শুরু করেছি।
এসময় তিনি দাওয়াতুল হকের কাজকে আরো বেগমান করতে এবং নিজেও যেন এই কাজের সাথে জড়িত থাকতে পারে, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন শেখ আব্দুল্লাহ।
ইজতেমা উপলক্ষ্যে সুন্নতের আমলি মশক, দেশ-বিদেশের আলেমদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান, জিকির এবং দোয়া-মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মজলিসে দাওয়াতুল হক মহানবী সা. এর জীবন, আদর্শ ও সুন্নত চর্চার একটি বিশেষ কেন্দ্র। দেশব্যাপী সাধারণ মানুষদের আজান, ইকামত, নামাজ, ওজু, জানাজাসহ সুন্নতের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ হয়।
মারকাজী ইজতেমায় দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের সব হালকার আমীর, নায়েবে আমীর, কর্মীবৃন্দ ও ইমাম, মুয়াজ্জিন, উলামা-মাশায়েখসহ সবস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান উপস্থিত হয়েছেন।
এছাড়াও দেশ বরেণ্য আলেম-উলামা ও পীর-মাশায়েখরা ইজতেমায় উপস্থিত রয়েছেন।
রাত ৯টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হবে।
আরএম