সাজ্জাদ আকবর
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে নির্মিত ইউরোপের সর্ববৃহৎ মসজিদটি আজ বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হয়েছে। গত ছয় বছর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের হাতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত এ মসজিদটি হিজরি সনের পবিত্র রজব মাসের প্রথম রাত্রিতে খুলে দেওয়া হলো।
ফজরের আজান ও নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলো বিশাল এ মসজিদ। শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে সহজেই চোখে পড়ে বিশাল এ মসজিদ।
উসমানি সালজুক আমলের আদলে নির্মিত ইউরোপের বৃহত্তম এ মসজিদটি একসাথে ৬৩ হাজার মুসল্লি ধারণ করতে সক্ষম। মসজিদের পাশাপাশি এতে বিশাল একটি কমপ্লেক্স রয়েছে। যাতে ইসলামি ইতিহাস সংরক্ষক নয়নাভিরাম মিউজিয়াম, আর্ট গ্যালারি, মনোরম ও সুবৃহৎ লাইব্রেরি, সুবিশাল কনফারেন্স হল ও ৩৫ হাজার ক্যারিয়ারের সুবিস্তৃত পার্কিং লটসহ নতুন নতুন বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে।
ইস্তাম্বুলের পার্বত্য অঞ্চল তাশামালিজার সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হওয়ায় মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে তাশামালিজা মসজিদ। মসজিদে সর্বমোট ছয়টি মিনারা রয়েছে, যা ইসলাম ধর্মের ছয়টি মৌলিক বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে। বড় মিনারা দুটির উচ্চতা ১০৭.১ মিটার যা মসজিদে নববীর মিনারা হতেও লম্বা।
একটি বিশেষ তাৎপর্যের দিকে লক্ষ রেখে ১০৭.১ সংখ্যাটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংখ্যার মাধ্যমে ১৭০১ সালের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
সেলজুকি সুলতান আলাব আরসালান ১৭০১ সালে মালাজগ্রিতের যুদ্ধে বাইজান্টাইনকে পরাজিত করেছিলেন। মসজিদটির ৭২ মিটার উচ্চতার প্রধান গম্বুজটি শহরে বসবাসকারী ৭২ টি জনগোষ্ঠীর ইঙ্গিত বহন করে। আর ৩৪ মিটার ব্যাসের দ্বিতীয় গম্বুজটি ইস্তাম্বুলের গাড়ির লাইসেন্স নম্বর প্লেট উপস্থাপন করে।
গম্বুজগুলোর আশেপাশে মহান আল্লাহর ১৬ টি নাম কারুকার্যে খচিত করা হয়েছে। যা উসমানি তুর্কিদের হাতে নির্মিত ১৬ টি রাষ্ট্রের নিদর্শন বহন করে। মসজিদটির ফ্লোরে ১৭ হাজার বর্গমিটারের সুবৃহৎ ও নয়নাভিরাম একটি গালিচা বিছানো হয়েছে, যা বিশেষ পরিকল্পনা ও কারুকার্যে তৈরি। নামাজের পাশাপাশি মসজিদটিতে জানাজা আদায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
আয়তনগত দিক বিবেচনায় এশীয় ও ইউরোপ অঞ্চলে এটিকে বলা হচ্ছে সর্ববৃহৎ মসজিদ। বিগত প্রায় এক শতাব্দীতে আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর এটিই তুরস্ক নির্মিত সর্ববৃহৎ মসজিদ।
তুরস্কের বৃহত্তম মসজিদটি নির্মাণের তত্ত্বাবধান প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই করেছিলেন, যা নিয়ে দেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। দেশটির সেক্যুলারদের একটি অংশ রাষ্ট্রীয় টাকায় এত বড় মসজিদ নির্মাণ নিয়ে এরদোগানের সমালোচনায় লিপ্ত হয়েছিলেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
আরআর