প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। জিনের অস্তিত্বের কথা কুরআনে এসেছে। কিন্তু ভূত বলতে কোনকিছু কি আছে? কুরআন হাদিসে কি এমন কিছু বলা হয়েছে? নাকি সবই জিন, ভূত কেবলই মানুষের কল্পনা? আর ভূত বলতে কিছু থেকে থাকলে জিন ও ভূতের মধ্যে কী পার্থক্য?
উত্তর : ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। জিন আরবী শব্দ। বাংলাতেও জিনই বলা হয়। কিন্তু ভূত বাংলা শব্দ। এর আরবী হল ইফরীত, বহুবচনে আফারীত। (দেখুন : আল-মু’জামুল ওয়াফী, পৃষ্ঠা-৭০১)
কুরআনে ভূতের কথা এসেছে। সূরা আন-নামলের ৩৯ নং আয়াতে ইফরীত তথা ভূতের কথাটি এসেছে এভাবে :
قَالَ عِفْريتٌ مِنَ الْجِنِّ أَنَا آَتِيكَ بِهِ قَبْلَ أَنْ تَقُومَ مِنْ مَقَامِكَ وَإِنِّي عَلَيْهِ لَقَوِيٌّ أَمِينٌ
এক শক্তিশালী জিন বলল, আপনি আপনার স্থান থেকে উঠার পূর্বেই আমি তা এনে দেব। আমি নিশ্চয়ই এই ব্যাপারে শক্তিমান, বিশ্বস্ত। (সূরা নামল, আয়াত : ৩৯)
এ আয়াতে ইফরীতুম মিনাল জিন অর্থাৎ জিনদের মধ্যে থেকে এক ইফরীত বা ভূত কথাটি এসেছে।
এমনিভাবে হাদীসেও ইফরীতুম মিনাল জিন কথাটি এসেছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, إن عفريتا من الجن تفلت علي البارحة ليقطع علي الصلاة فأمكنني الله منه
“গত রাতে একটি শক্তিশালী জিন আমার উপর চড়াও হতে চেয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল আমার নামাজ নষ্ট করা। আল্লাহ তার বিরুদ্ধে আমাকে শক্তি দিলেন।” (বর্ণনায় : বুখারী, সালাত অধ্যায়)
তাফসীরবিদগণ বলেছেন, জিনদের মধ্যে যারা অবাধ্য, বেয়ারা, মাস্তান, দুষ্ট প্রকৃতির ও শক্তিশালী হয়ে থাকে তাদের ইফরীত তথা ‘ভূত’ বলা হয়। (আল মুফরাদাত ফী গারীবিল কুরআন)
ইফরীত শব্দের অর্থ বাংলাতে ভূত। ইফরীত বা ভূত, জিন ছাড়া আর কিছু নয়। সব ভূতই জিন তবে সব জিন ভূত নয়।
আরএম/