রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
আগামী রমজান মাসে শুধু ‘ওলামা লীগ’ নামে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা আওয়ামী ওলামা লীগ। নাম থেকে ‘আওয়ামী’ শব্দ বাদ দিচ্ছে সংগঠনটি এবং আগামী রোজার মাসের আগেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হবে।
৯০ এর দশক থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছে দলটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার আওয়ামী লীগ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। এ কারণে তারা ‘আওয়ামী’ শব্দ বাদ দিয়ে নতুন নামে নতুনভাবে কাজ করতে চান বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শেখ আবু হাসান শরিয়তপুরী।
তিনি বলেন, নতুনভাবে আমরা আত্মপ্রকাশ করে ইসলামবিরোধী যে কোনও পদক্ষেপ প্রতিরোধ করতে আমরা কাজ করব।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী ওলামা লীগ অফিসিয়ালি ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে ওলামা লীগ বাংলাদেশ সরকার গৃহীত জাতীয় উৎসব পহেলা বৈশাখকে ইসলাম বিরোধী ও অনৈসলামিক আখ্যায়িত আয়োজন বন্ধের দাবি করে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে স্টার জলসা, স্টার প্লাস ও জি বাংলাসহ ভারতীয় সব টিভি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধেরও দাবি করে। একই বছর ওলামা লীগ সুপ্রীম কোর্টের সামনে থেকে গ্রীক বিচারের দেবী থিমিসের মুর্তি সরানোর দাবি করেছিল। এছাড়াও বিপিএল নিষিদ্ধসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে কঠোর সমালোচিত হয় আওয়ামী ওলামী লীগ।
এ কারণে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদসহ অন্য নেতারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে এ সংগঠনটির কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানান। সর্বশেষ এ বছরের ২১ জানুয়ারি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে বলা হয়, ‘আওয়ামী ওলামা লীগ’ নামে আওয়ামী লীগের কোনও সহযোগী সংগঠন নেই।
এমনকি ‘আওয়ামী ওলামা লীগ’ নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনি। আওয়ামী ওলামা লীগের নাম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়।
পরে দলটির নেতৃবৃন্দ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলেন, ওলামা লীগের দাবী ও কর্মসূচির কারণে জামাত-হেফাযত কোন ইস্যুই খুঁজে পায়না। বামপন্থী ইসলাম বিদ্বেষীদের কারণে অতীতেও আওয়ামী লীগকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। সাম্প্রতি আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী বামপন্থী এবং কিছু মিডিয়া ওলামা লীগের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে।
সেই সময় ওলামা লীগ বাদ দিয়ে নতুন সংগঠন করা মানে স্বাবিরোধী বক্তব্য- এবং বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করা বলে বক্তব্য প্রদান করে দলটির নেতাকর্মীরা। তবে এবারে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নতুনভাবে আত্মপ্রকাশের জন্য এরইমধ্যে গঠনতন্ত্র তৈরির কাজ চলছে। এতে ‘আওয়ামী ওলামা লীগ’ এর নেতারাই থাকবেন বলে জানিয়েছে দলটির ধারণ সম্পাদক মাওলানা শেখ আবু হাসান শরিয়তপুরী।
আরএম/