আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীর বলেছেন, আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত হলো মুসলমানদের ঈমান। যারা খতমে নবুওয়ত অস্বীকার করে কুরআন, হাদীস ও ইজমায়ে উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কাফের।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর ভারতীয় এজেন্ট মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী মিথ্যা নবুয়তের দাবী করে খতমে নবুওয়তকে অস্বীকার করেছে। তার অনুসারীরা আহমদীয়া মুসলিম জামাত নাম দিয়ে কাদিয়ানী মতবাদ সৃষ্টি করে সরলমনা মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে ঈমানহারা করছে। তাদের এই জঘন্য ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম দীর্ঘ দিন থেকে সরকার ও দেশবাসীকে সতর্ক করে আসছে।
আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, বিশ্বের অনেকগুলো মুসলিম সংস্থা ও দেশ কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে । ইসলামের শাম্বত আকীদা-বিশ্বাস আর কাদিয়ানীদের জাল ও বিকৃত আকীদা বিশ্লেষণ করে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ পর্যায়ে সৌদিআরব, কাতার, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার সুপ্রিম কোর্ট, কাদিয়ানী বা আহমদীয়াদেরকে মুসলিম সমাজ-বহির্ভূত একটি অমুসলিম ধর্মাবলম্বী বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
স্বাধীন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এক রায়ে বলেন- “যে ব্যক্তি মির্যা গোলাম আহমদকে মান্য করে তাকে কখনো মুসলমান বলা যায় না।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেক রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো আন্দোলন নেই। কাদিয়ানীরা সংখ্যালঘু, কিন্তু তারা নিজেদের পরিচয় 'মুসলমান' দিয়ে থাকে। এজন্যই খতমে নবুওয়ত তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। সরকার যদি তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করে চিহ্নিত করে দেয়, তাহলে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মত দেশের নাগরিক হিসেবে তারাও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, এতে কারো কোনো আপত্তি থাকেনা।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, যেসব কাদিয়ানী সরকারের উচ্চপদে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, এবং কাদিয়ানীদের মদদ যোগাচ্ছে, তাদের সরকারি পদসমূহ হতে অনতিবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে। কাদিয়ানীদে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে হবে।
আজ জুমা থেকে মিরশ্বরাই উপজেলার তেমুহানী মোহাম্মদীয়া আজিজীয়া মদরাসার তিন যুগপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ইসলামী মহাসম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির ভাষণে উপরোক্ত কথা বলেন। সম্মেলনে বিদেশী মেহমান ছিলেন, পবিত্র মক্কা শরীফের মুফতি শায়খ আবদুল্লাহ হামেদ, সাউথ আফ্রিকার শায়খ মাহমুদ আদিউলা।
মাদরাসার পরিচালক মাওলানা কারী নুরুজ্জামান ও আলহাজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা মোহাম্মদ জমির উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, বাবুনগর মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জামেয়া পটিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা জাহেদুল্লাহ বিন ইউনুস, ঢাকা জামেয়াতুল আবরারের মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল হুদা, মুফতি রিজওয়ান রফিকী।
সম্মেলনের শেষে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন জাগ্রত কবি মাওলানা মুহিব খান।
আরআর