আওয়ার ইসলাম: মহানবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে অস্বীকারকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের পক্ষাবলম্বন করায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের পদত্যাগ দাবী করে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি কানিয়ানীদের ইজতেমার বিরুদ্ধে সারােদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম।
আজ রোববার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আর্ন্তজাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবী জানানো হয়।
কাদিয়ানী সম্প্রদায় আগামী ২২,২৩,২৪, ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় জেলায় জাতীয় ইজতেমা নামক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান আকীদা বিধ্বংসী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিবাদ ও অনতিবিলম্বে তা বন্ধের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বলে জানা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা নূরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক মজলিসে তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ এর উদ্যোগে-কাদিয়ানী সম্প্রদায় (আহমদিয়া জামাত) এর পক্ষ হতে আগামী ২২,২৩,২৪, ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় জেলায় ‘জাতীয় ইজতেমা’ নামক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান আকীদা বিধ্বংসী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিবাদে ও অনতি বিলম্বে তা বন্ধের দাবিতে ১০ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে।
আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন যে, কাদিয়ানি সম্প্রদায় (তথাকথিত আহমদিয়া জামাত) সারা বিশ্বের সর্বস্তরের ওলামা মাশায়েখ, মুফতীয়ানে কেরাম তথা সকল মুসলমানের ঐক্যমতে কাফের, অমুসলিম ও সংখ্যালগু হিসাবে সাব্যস্ত কারন কাদিয়ানিরা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. কে সর্বশেষ নবী মানে না তারা মির্জা গোলাম আহম্মদ কাদিয়ানিকে নবী হিসাবে বিশ্বাস করে।
অথচ প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সা. যে সর্বশেষ নবি একথা পবিত্র কোরআনের শতাধিক আয়াত এবং আড়াইশতাধিক বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা সুপ্রমাণিত।
তারা এসকল কোরআনের আয়াত ও বিশুদ্ধ হাদীস সমুহ অস্বীকার করার কারনে কাফের হয়ে গিয়েছে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নাই।
আপনাদের অবগতির জন্য মির্জা গোলাম আহম্মদ কাদিয়ানির রচনা সমগ্র ‘রূহানী খাজায়েন’ নামক পুস্তক থেকে তার উদ্বিৃত সহকারে ৭২টি ভ্রান্ত দাবি সমুহ হতে মাত্র কয়েকটি দাবি আপনাদের বিবেচনার জন্য উল্লেখ করা হল-
১. আমি রাসূল। -খন্ড -১৮ পৃষ্ঠা -২৩১
২. আমি খাতেমূল আম্বিয়া।-খন্ড -১৮ পৃষ্ঠা -২১২
৩. আমি শরীয়তধারী নবী। -খন্ড -১৭ পৃষ্ঠা -৪৩৫
৪. আমি সকল নবী হতে শ্রেষ্ঠ। -খন্ড -২২ পৃষ্ঠা -৫৭৪
৫. আমি আঁহযরত সা. হইতে শ্রেষ্ঠ। -খন্ড -১৯ পৃষ্ঠা -১৮৩
৬. আমি খোদার অনূরুপ। -খন্ড -১৭ পৃষ্ঠা -১৫৮
৭. আমি খোদার প্রতিচ্ছবি। -খন্ড -২২ পৃষ্ঠা -১৫৮
আরো বিস্তারিত জানার জন্য কাদিয়ানি সম্প্রদায় কর্তৃক প্রকাশিত ‘রূহানী খাজায়েন’ নামক পুস্তক থেকে সংগৃহিত মোট ৭২টি ভ্রান্ত দাবি সম্বলিত ‘কাদিয়ানের বহুরূপী ভন্ডনবী’ নামক পুস্তিকাটি আজকের সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যর সাথে আপনাদের অবগতির জন্য সংযুক্ত করা হল।
তিনি আরো বলেন, অতীব গুরুত্ব সহকারে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে, রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্তর্ভুক্ত ১০৫টি দেশের প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্তে কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে অমুসলিম ও সংখ্যালগু হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয়েছে।
বিগত ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ সালে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় প্রকাশিত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্ট রায় ঘোষনা করেছে যে, ‘আইনের দৃষ্টিতে কাদিয়ানি সম্প্রদায় অমুসলিম এবং কাফের’ বিচারপতি আব্দুল জলিল ও বিচারপতি ফজলুল করিম এর যৌথ ব্যঞ্চ হতে এই রায় ঘোষনা করেন।
১. উল্লেখিত দলিল প্রমানের ভিত্তিতে কাদিয়ানি সম্প্রদায় (আহমদিয়া জামাতকে) অন্যান্য মুসলিম রাষ্টের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারকে অমুসলিম সংখ্যালগু ঘোষনা করার জন্য আপনাদের মত বিবেকবান সাংবাদিকদের মাধ্যমে জোর দাবি যানাচ্ছি।
২. অনতি বিলম্বে পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের আগামী ২২,২৩,২৪ ফেব্রুয়ারি তথাকথিত জাতীয় ইজতেমা বন্ধ করতে হবে।
৩. কাদিয়ানি সম্প্রদায় কোরআন হাদীসের দৃষ্টিতে অমুসলিম হয়েও মুসলমানদের পথ ভ্রষ্ট করছে বিধায় তাদের জন্য ইসলামি পরিভাষা যথা নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, মসজিদ, মাদরাসা আজান, ইমাম, মোয়াজ্জিন ইত্যাদি পরিভাষা ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
৪. কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের যাবতীয় বইপুস্তক, লিটারেচার, লিফলেট, পাক্ষিক ও মাসিক পত্র পত্রিকা প্রচার, সংরক্ষন ও বিতরন সম্পূর্ণ রুপে বন্ধ কারার জোর দাবি জানাচ্ছি।
শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম সংবাদ সম্মেলন থেকে কর্মসূচীও ঘোষণা করেন। ১. আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
২. পঞ্চগড়ে মুসলমানদের ২১-২৫ ফেব্রুয়ারির ইসলামী মহাসম্মেলন যে কোন মূল্যে বাস্তবায়ন করতে সকলের প্রতি আহব্বান জানানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী, সেক্রেটারি মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা মাসউদ আহমদ, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা আশিকউল্লাহ, মুধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামীদ, মাওলানা মহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল আমীন, ছারছীনার পীর সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা মাসউদুল করীম প্রমূখ।
-এটি