আওয়ার ইসলাম: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হলে দেশের প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলবে আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে ক্ষমতায় গেলে দলটি তরুণ্যকে উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তর করে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার কিছু পর রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ শীর্ষক আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা শুরু হয়। এতে এসব ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইশতেহারে বিশেষ অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, আগামী ৫ বছরে ‘আমার গ্রাম হবে আমার শহর’। সব মিলিয়ে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকার দিয়েছে দলটি।
ইশতেহার ঘোষণায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবো। শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেবো। আগামী ৫ বছরে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। পাকা সড়কের মাধ্যমে সকল গ্রামকে জেলা/উপজেলা শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।’
শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ তৈরি হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সুপেয় পানি এবং উন্নতমানের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সুস্থ বিনোদন এবং খেলাধুলার জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।’
এ ছাড়া, কর্মসংস্থানের জন্য জেলা/উপজেলা কলকারখানা গড়ে তোলা হবে বলে জানান শেখ হাসিনা। তার দলের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী, আগামী ৫ বছরে ইন্টারনেট বা তথ্যপ্রযুক্তি সর্বত্র পৌঁছে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধানতম শক্তি হচ্ছে যুবশক্তি। দেশের এই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রুপান্তরের লক্ষ্য অর্জনে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি –এই শ্লোগান বাস্তবায়নে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে।’
নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে আগামী ৫ বছরে এককোটি ২৮ লাখ কর্মসৃজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রতি উপজেলা থেকে প্রতিবছর গড়ে এক হাজার যুব/যুব মহিলার জন্য বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় জীবনে সবস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ এবং নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধ পরিকর বলেও জানান শেখ হাসিনা।
এক নজরে আওয়ামী লীগের ২১ দফা অঙ্গীকার-
১. আমার গ্রাম, আমার শহর- প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ, ২. তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করা এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা, ৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, ৪. নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ, ৫. পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা, ৬. সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল, ৭. মেগা প্রজেক্টগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন, ৮. গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা, ৯. দারিদ্র্য নির্মূল, ১০. সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, ১১. সকলের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা, ১২. সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, ১৩. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, ১৪. আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা- লক্ষ্য যান্ত্রিকিকরণ, ১৫. দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন, ১৬. জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, ১৭. ব্লু ইকোনোমি- সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন, ১৮. নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা, ১৯ . প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অটিজম কল্যাণ, ২০. টেকসই উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, ২১. সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
কেপি