হামিম আরিফ: কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদের স্বীকৃতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল ৪ নভেম্বরের শুকরানা মাহফিলের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দীতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে কয়েক লক্ষ উলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকবেন।
জানা যায়, শুকরিয়া মাহফিল উপলক্ষ্যে হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা আহমদ শফী রাত ৯ টার দিকে বিমানে ঢাকায় এসেছে পৌঁছেছেন। তিনি বর্তমানে উত্তরায় অবস্থান করছেন বলে আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস।
এদিকে শুকরানা মাহফিল উপলক্ষে শনিবার দুপুরের মধ্যেই সোহরাওয়ার্দীতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঞ্চের সামনে বসানো হয়েছে ৫ হাজার চেয়ার। শনিবার দুপুরেই হাইআতুল উলয়ার নেতৃবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন করেছেন।
সূত্র জানায়, মাহফিলে কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম হবে। দূরের জেলাগুলো থেকে বিকালেই রওনা দিয়েছে রিজার্ভ গাড়ি। তারা রাতে এসে ঢাকার বড় মাদরাসাগুলোতে অবস্থান করবেন। ঢাকার পাশের জেলার আলেমগণ রওনা দেবেন রাত ১১ টা থেকে ১টার মধ্যে। যাতে ফজরের পর পর সোহরাওয়ার্দীতে পৌঁছতে পারেন।
শুকরানা মাহফিলে কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম করতে চায় হাইআতুল উলইয়া। আর এ জন্য সবরকম আয়োজন সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি। দেশের প্রতিটি জেলা এমনকি থানা থেকেও একাধিক বাস রিজার্ভ করে আসবে আলেম উলামা মাদরাসা শিক্ষার্থীরা।
বোরবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হবে শুকরানা মাহফিল। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন আল্লামা আহমদ শফী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
সমাবেশে প্রবেশের জন্য ৬ টি গেট থাকবে। এর মধ্যে ২ টিতে ভিআইপি অতিথিগণ প্রবেশন করবেন এবং বাকি ৪ টিতে শিক্ষার্থী ও উলামায়ে কেরাম।
ফজরের পর থেকেই মাঠে প্রবেশ করা যাবে বলে জানা গেছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের সাথে ছাতা, পানির বোতলসহ কোনো দাহ্য পদার্থ থাকতে পারবে না। মাঠে অজু ও পানি পানের ব্যবস্থা থাকবে।
জানা গেছে, শুকরানা মাহফিলে সর্বাধিক লোক সমাগমের জন্য কাজ করছে ৬ বোর্ডের নেতারা। বোর্ডগুলোর অধীনে থাকা মাদরাসাসমূহের ছাত্র শিক্ষকদের আসার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন তারা।
সূত্র জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের মঞ্চে ৫০ জনের মতো অতিথি থাকবেন। বেফাকসহ ৬ বোর্ডের নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া ৫ হাজার ভিআইপি আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে নেতৃস্থানীয় আলেম ও সরকারি অতিথিগণ বসবেন। হাইআতুল উলয়ার নেতৃবৃন্দ মাহফিলে বক্তব্য পেশ করবেন।
অনুষ্ঠান থেকে কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে কাফের ঘোষণা ও উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে করা সব ধরনের হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
বিগত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান প্রদান আইন পাস হয়। হাইআতুল উলইয়া এ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়ার পরিকল্পনা করে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণমূক্ত নিরঙ্কুশ স্বীকৃতি আদায়ে অনন্য অবদান রাখায় আল্লামা শাহ আহমদ শফীকেও সংবর্ধনা দেয়া হবে।
কওমি স্বীকৃতি: বঙ্গবন্ধুকন্যার অর্জন শিরোপার সোনালি পালক
সোহরাওয়ার্দীতে দশ লাখ আলেমের সমাবেশ হবে