সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ঢাকার ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখাতে চায় ইসলামী আন্দোলন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম
আওয়ার ইসলাম

দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে ৫ অক্টোবর (শুক্রবার) বাদ জুমা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডাকা মহাসমাবেশে লক্ষাধিক মানুষ জমায়েত করতে চায়।

আর সে কারণে রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি ও প্রচারণা। পথসভা, লিফলেট বিলিসহ নানাভাবে মানুষকে আকর্ষণ করতে সময় ব্যয় করছেন নেতাকর্মীরা।

খেলাফত ও রাজনীতি ইসলামী দৃষ্টিকোণ

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।

এ মহা সমাবেশের ঘোষণার পর থেকে দলটি সমাবেশ সফল করতে জেলায় জেলায় প্রচারণা চালিয়ে আসছে। ঢাকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে বলেও তারা আশা করছেন।

সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে দলটির আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। নিবন্ধিত সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজমান। প্রধান দুটি রাজনৈতিক জোটের যুদ্ধাংদেহি মনোভাব দেশের সর্বত্র এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ শেষে আগামী জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে, তা এখনো পরিষ্কার হয়নি। এসব কারণেই এ মহাসমাবেশ।

গত সিটি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বেশ প্রভাব দেখিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আর বড় দলগুলোর মধ্যে এটিই একমাত্র রয়েছে জোট মহাজোটের বাইরে। সুতরাং সোহরাওয়ার্দীর এ সমাবেশে চোখ থাকবে সবার।

সমাবেশের প্রস্তুতি ও প্রভাব ও উপস্থিতি আর লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও নির্বাচন পরিচালনা বিষয়ক সেলের সদস্য মাওলানা গাজী আতাউর রহমান

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি অতীতের সব বড় বড় সমাবেশ থেকে বড় সমাবেশ হবে ৫ অক্টোবরের সমাবেশ। কারণ আমরা সমাবেশের ইস্যুগুলোর গুরুত্ব দেশের মানুষের থেকেও ‍উপলব্ধি করতে পারছি।

দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতেই মূলত আমাদের ঐতিহাসিক এ সমাবেশের ডাক দেয়া।

এসমাবেশ আগামী নির্বাচন বা রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,  সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হবে এ সমাবেশে। প্রতিটি জেলা থানা বিভাগ থেকে আসছে মানুষ। আমরা আশা করি ঢাকার ইতিহাস ভিন্ন করে লিখতে হবে এ সমাবেশের কারণে।

মূলত এ সমাবেশ থেকেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একক ইসলামি দল হিসেবে অনুষ্ঠানিক যাত্রা করবে। এখান থেকে নতুন মাত্রায় আমাদের যাত্রা শুরু হবে।

আমরা সিটি নির্বাচন করে একক নির্বাচনে আরো আশাবাদী হয়েছি। দেশের জনমানুষের আস্থা আমাদের ওপর আছে। এর প্রতিফল আমরা সিটি নির্বাচনগুলোতে দেখেছি।

প্রতিটা কেন্দ্রেই মানুষ হতপাখায় ভোট দিয়েছে স্বতুস্ফূর্ত। তাই আমরা আগামী নির্বাচনে আশাবাদী।

মহা সমাবেশ নিয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।

তিনি বলেন,  নির্বাচন ঘিরেই আমাদের এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ সমাবেশ হবে বলে মনে করি আমরা।

আমরা দেখেছি বাংলাদেশের সিটি নির্বাচনগুলোতে এবার জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকেও কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোট বেশি পেয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

তাই দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতেই ৫ অক্টোবর (শুক্রবার) বাদ জুমা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন মহা সমাবেশের আহ্বান করেছে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সম্পর্কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, দেশে ইসলামী শাসন না থাকায় মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে মানুষ ভোটাধিকার ফিরে পাবে। পীর সাহেব বলেন, এদেশে দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে আগামী নির্বাচনে হাতপাখাকে বিজয়ী করতে হবে।

আলেমদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে গ্রীন খিদমাহ প্রপার্টিজ

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত যারা দেশ পরিচালনা করেছে তারা সকলেই সন্ত্রাস ও দুর্ণীতির মাধ্যমে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে বটগাছে পরিণত হয়েছে।

ঘুরে ফিরে দুর্নীতিবাজরা ক্ষমতায় আসলে জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। চলমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এজন্য প্রয়োজন নির্বাচনকালীন সরকারের। তিনি ৫ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাতীয় মহাসমাবেশ সফলের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সমাবেশ সফলের বিষয়ে তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে লোকজন আসবেন। বাস গাড়ি ঠিক করা হয়েছে। এখন যদি বাধার সম্মুখিন না হোন তাহলে তারা সমাবেশে যোগ দিতে পারবেন।

লোকসমাগমের আশা করছি প্রচুর। রাজধানী ঢাকাসহ সব এলাকাতেও ফেস্টুন ব্যানারের মাধ্যমে প্রচারণা চলছে।

আগামী কাল রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ সফল করতে মিছিলেরও আয়োজন করা হয়েছে। আর আমরা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতিও পেয়েছি সরকারের থেকে। ২৩টি শর্তের পর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ছে।

ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সারা দেশের সব জেলার নেতাকর্মী এ মহাসমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।

আরও পড়ুন: হেফাজত, কওমি স্বীকৃতি ও সংবর্ধনা বিষয়ে দীর্ঘ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী

-আরআর

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ