এম ওমর ফারুক আজাদ
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুরে মো: মাসুদুর ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রায় এক বছর পরও ভূজপুর বা ফটিকছড়ি থানার পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
কোন থানা মামলাও নেয়নি। ব্যবসায়ী মাসুদুল ইসলামকে লাঠি ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে আধমরা করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত মাসুদ একজন ব্যবসায়ী হলেও তাকে রিক্সাওয়ালা হিসাবে প্রচার করেছে আসামীরা।
নিহত ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মাসুদুল ইসলাম পূর্ব সুয়াবিল টোনা গাজী বাড়ির মৃত শাহ আলমের পুত্র। ঘটনাটি ঘটেছে গত বছর ৩০ নভেম্বর ২০১৭ইং এলাকার নতুন রাস্তার মাথা নামক স্থানে।
হত্যার পর মৃত ব্যবসায়ী মাসুদুল ইসলামের স্ত্রী জোছনা আক্তার স্বামী হত্যার বিচার নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে প্রায় এক বছর ধরে।
জোছনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজী তারিখে এরাকার চিহিৃত কয়েকজন সন্ত্রাসী আমার নিরপরাধ স্বামীকে ধরে নিয়ে উপর্যপুরী মারধর করছে এ খবর পেয়ে আমি দৌড়ে গেলে সন্ত্রসীরা আমার স্বামীকে বেধরক মারধর করে আধমরা করে রাখে,তাদের বেদম মারধরের কারনে আমার স্বামী পানি খেতে চাইলে তারা পানির বদলে মূখে বিষ ঢেলে দেয়।
আমি সন্ত্রাসীদের হাতে পায়ে ধরেও তাদের নিবৃত্ত করতে পারিনি। আমার আর্তচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
তারা সবাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। পরে আমার স্বামীকে উদ্ধার করে আমার দেবর মাহফুজ ও ইমন হোসেনের সহয়তায় নাজিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দুইদিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে ৩০ সভেম্বর ২০১৭ ইংরেজী তারিখে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
জোছনা আক্তার বলেন, এ ঘটনার পর স্থানীয় পাচঁলাইশ থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে কর্তবরত পুলিশ কোন অভিযোগ গ্রহণ না করে এখন করবো, পরে করবো বলে কালক্ষেপন করে। শত অনুরোধ করেও কোন অভিযোগ দায়ের করতে পারিনি।
এরপর ফটিকছড়ির ভূজপুর থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও তৎকালনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মামলা বা অভিযোগ কিছুই নেয়নি আরো থানা থেকে চলে যেতে বলে। পরে পাচঁলাইশ থানা একটি অপমৃত্যু জি.ডি করেন, জিডি নং-২২৩৭ ।
তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজী। অবশেষে অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করে ব্যর্থ হয়ে স্বামী হত্যার বিচারের আশায় চট্টগ্রাম আদালতে তার স্বামী হত্যায় জরিত ১০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআরবি মামলা নং-৪৪৬খ/২০১৮ ইংরেজি।
বিজ্ঞ আদালত মামলা আমলে নিয়ে গত ২৫ আগষ্ট নগরীর পাচঁলাইশ থানা ও ভূজপুর থানাকে প্রতিবেদন জমা দেননি। বিজ্ঞ আদালত আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সময় সীমা বেঁধে দেন।
জোছনা আক্তার আদালতে মামলা করার পর বিবাদীরা তাদের পরবিার পরিজনদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে ফটিকছড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তার ছোট বোন চম্পা কলি। গত ৩০ আগষ্ট ৬ জনকে বিবাদী করে ফটিকছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ নং-১০০৮/১৮।
জোছনা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, তার রয়েছে ৩ জন কন্যা সন্তান। তারা হলো সোবহা ইলদীন (৬), আবহা ইলদীন (৩) ও ওয়াজ কুরুনী (১) ।
সন্ত্রসীরা আমার স্বামীকে হত্যা করে আমার ৩ কন্যা সন্তানকে এতিম করেছে। আমি এখন আমার তিন কন্যাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমার স্বামীর হত্যার নিউজটা ফটিকছড়ির কথিত কিছু সাংবাদিক আসামীদের থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে আমি অসহায় হওয়ার কারণে নিউজটা করেনি। এদিকে আদালত মামলা করার পর থেকে সন্ত্রাসীরা আমাকে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেবে কওমি আলেমরা
কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন