সুফিয়ান ফারাবী
আওয়ার ইসলাম
গোলাপের প্রতি ভালোবাসা সবার মনে। গোলাপের প্রতি দুর্বল প্রতিটি হৃদয়। রক্তপিপাসু সন্ত্রাসীর দিল কোমল হয় গোলাপের ছোঁয়ায়।শিশুর সামনে গেলাপ রাখলে সেও খুব আগ্রহের সাথে গোলাপ ছোঁয়।
যেন পৃথীবির সবকিছু তার কাছে অচেনা হলেও গোলাপের সাথে তারবন্ধুত্ব দীরঘ দিনের। সবকিছু পর হলেও গোলাপ তার আপন। অথচ শিশুটি গোলাপ চেনেনা। জানেনা গোলাপ সম্পরকে কোন কিছুই।
তবুও ছোট বড় সবার মনেই গোলাপের জন্য থাকে আলাদা মায়া, ভিন্ন ধরনের মমতা। গোলাপ ভালো লাগেনা,বা গোলাপ ভালোবাসে না এমন মানুষ জগতে দেখিনি। শুনিওনি কখনো।
ভালোবাসার এই ফুল গোলাপের গ্রামে পরিনত হয়েছে সাভারের বিরুলিয়া। বিশাল আয়তনের এই গ্রামের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে গোলাপের বাগান। এ গ্রামের মানুষদের জীবিকা উপারজনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে গোলাপ চাষ।
বলা যায় এলাকার মানুষদেরকে দারিদ্রতার চাদর থেকে বের করে সচ্ছলতার পোষাক পড়িয়েছে ভালোবাসার বারতাবাহক এই ফুল।সবুজে ঘেরা এই গ্রমের চারিদিকে তাকালে শুধু গোলাপ আর গোলাপ।
সবুজের মাঝে মাঝে গোলাপের উপস্থিতি যেন স্বরগের কাছাকাছি পৌঁছে দেয় আগন্তুককে। উঁচু নীচু দ্বীপের মতো এই গ্রামে ফসলাদির চাষাবাদ তেমন একটা নেই।
নেই চার পায়াপ্রণির প্রতিপালনও। গোলাপ চাষই একমাত্র রুজি রোজগারের মাধ্যম হয়ে আছে বিরুলিয়া বাসির। নিন্ম থেকে মধ্যবিত্ব এমনকি এলাকার প্রভাবশালী ধনী ব্যাক্তিদের জীবিকারও জোগান দিচ্ছে ভালোবাসার এই ফুল ।
লাভজনক ও কম খরচে ভালো আয় হয় গোলাব চাষে। তা ছাড়া জায়গাও কম লাগে অন্য সব চাষাবাদের চেয়ে। তবে প্রয়োজন সঠিকভাবে যত্ন করা। সার দেওয়া ও সময় করে পরিমাণ মতো পানিসিঞ্চন করা। ছোট ছোট নলের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই পানি পৌঁছাতে হয় গাছের গোড়ায়।
এ গ্রামে মুগ্ধ করার মতো দৃশ্য হলো, ভোর বেলায় চারিদিকে যখন আবছা আবছা অন্ধকার থাকে ,কুয়াষায় দূরের দৃশ্য অদৃশ্য মনে হয় ঠিক তখনই যেন ফুল নিয়ে মিছিলে নামে পুরো গ্রামের মানুষ। সবাই যখন একসাথে গাছ থেকে ফুল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে, তখন দূর থেকে দেখতে অনেকটা মিছিলের মতই দেখায়।
আরও অবাক করার বিষয় হলো , একই বাগানের একই গাছে নানা রঙের ফুল থাকে। কোনটার গায়ে গোলাপি পাপড়ি কোনটার গায়ে লাল। আবার কোনটার গায়ে হলুদ পাপড়ি আবার কোনটার গায়ে সাদা।প্রথম দেখায় অনেকটাই ধাঁধায় পড়তে হয়।
একই রঙের ফুলগাছের সংখ্যা খুবই কম। নানা রঙের ফুল চাষে আগ্রহী এখানকার মানুষজন ও ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া ক্রেতারাও লাল গোলাপের সাথে সাথে ঝুঁকছেন ভিন্ন রঙের ফুলের দিকেও।
১৬ ডিসেম্বও, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে জাতীয় দিবস গুলোর জন্য ফুল নেওয়া হয় এখান থেকে। ঢাকা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে যত ফুল প্রয়োজন তার পরিপূরণ চাহিদা মেটাতে সক্ষম সাভারের এই ফুলেররাজ্য।
তাছাড়া , ঢাকায় যেখানে একটি গোলাপ কিনতে খরচ হয় ১৫-২০ টাকা। বিশেষ ও জাতীয় দিবসগুলোতে ৩০-৫০ টাকা। সেখানে সাভারের এই গ্রামে প্রতিপিস গোলাপ খুচরা বিক্রি হয় ২-৪ টাকা দরে।
ঢাকায় ৫০ পিস গোলাপ কিনতে যেখানে খরচ হয় ১২০০- ১৫০০ টাকা, সেখানে ৫০ পিস পাওয়া যায়মাত্র ১০০-১৫০ টাকায়।
তবে যেসব দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে সেসব দিনগুলোতে গোলাপের দামটা একটু বেড়ে যায়। তবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে যায় না কখনই।
ব্যবসার হিসাব নিকাশ এখন হাতের মুঠোয়- ক্লিক
এটি/আওয়ার ইসলাম