বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সড়কে আন্দোলন দীর্ঘদিনের ক্ষোভের ফল: জমিয়ত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: জমিয়তে ইলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারকে অনতিবিলম্বে কার্যকরি উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় ছাত্রদের এই ন্যায্য আন্দোলন সারাদেশে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তারা বলেন, এই আন্দোলনের প্রতি ইতিমধ্যেই দেশের গণমানুষ ও অভিভকগণ তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ২ আগস্ট রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সম্পাদক মণ্ডলির এক বৈঠকে সড়ক নিরাপদ করার দাবীতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন।

জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজীজ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুহাম্মদ উল্লাহ জামী, মাওলানা সানা উল্লাহ মাহমুদী, অর্থসম্পাদক মুফতি জাকির হোছাইন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।

বৈঠকে জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার কোন একটা স্তরেও এই সরকারের সফলতা নেই। বরং তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে সম্পদের লুটপাট এবং ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে দমনপীড়ন নিয়েই ব্যস্ত। নাগরিক সমস্যা ও দেশের উন্নতির প্রতি তাদের নজর নেই।

তিনি বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় বাংলাদেশের মতো এত প্রাণহানীর ঘটনা বিশ্বের কোন দেশে হয় না। রাস্তায় চলাচলকারী অধিকাংশ গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং চালকদের লাইসেন্স নেই। রাস্তায় কীভাবে গাড়ি চালাতে হবে এবং যাত্রীদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে, এই নিয়ে চালক ও হেলপারদের জন্য কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই।

দলীয় মাস্তান ও চাঁদাবাজরা ফুটপাথ দখল করে দোকান বসিয়ে জায়গায় জায়গায় গাড়িচলা ও পথচারী চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে চলেছে। চালক-হেলপারদের বড় একটা অংশ মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি, খোদ ঢাকা শহরেই যাত্রীবাহী বাসে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের মতো লোমহর্ষক ঘটনার খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

গত কয়েক মাসে রাজধানীতে বেপরোয়া বাসের বেআইনী প্রতিযোগিতায় আরো বেশকয়েকজন ছাত্র হতাহত হয়েছে। অথচ এসব বন্ধে সরকার কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু জানা যাচ্ছে, পরিবহণ সংস্থাসমূহের বিভিন্ন সমিতির নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতায় নেতারা জড়িত থাকার কারণে ড্রাইভার, হেলপার ও শ্রমিকরা যাত্রীদের সাথে অত্যন্ত বাজে ও বেপরোয়া আচরণে জড়িয়ে পড়েছে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবীতে এই যে ছাত্ররা দলে দলে রাস্তায় নেমে পড়েছে এবং অভিভাবকগণও সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছে, এই ক্ষোভ কোন এক ঘটনাকে কেন্দ্রকরেই শুধু নয়। এটা দীর্ঘদিন ধরে পুঞ্জিভূত হচ্ছিল, সরকারকে বুঝতে হবে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবীতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রদের দাবী পূরণে মনোনিবেশ না করে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপি যদি এটাকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে বিরোধী দলকে দায়ী করার পুরনো খেলা শুরু হবে, এটা হিতে বিপরীত হবে।

কারণ, এই সরকার শুধু নিরাপদ সড়ক চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে এমন নয়, তারা দেশ পরিচালনার সকল পর্যায়ে শুধু ব্যর্থই হয়নি, বরং ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, ভোটচুরি এবং নাগরিক অধিকার হরণকে স্বাভাবিকরণ করে সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যে কারণে গণমানুষের ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হতে হতে বিস্ফোরণের অপেক্ষায় আছে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর ঢাকায় কয়েকটি স্থানে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মারমুখী ভূমিকা ও হামলার খবরে সতর্ক করে বলেন, আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। নিরপরাধ কিশোর ছাত্রদের উপর হামলা চালালে এক সময় বাঁধভাঙা জোয়ারের স্রোতের মতো লাখ লাখ অভিভাবক তাদের সন্তানদের রক্ষায় রাস্তায় নেমে পড়তে দেরি করবে না।

নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে মাদরাসা শিক্ষার্থীরাও

-আরআর

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ