আমিনুল হক কাসেমী
চিঠিটা এক ফরাসি যুবকের। সে আন্দালুসের একটি ইসলামি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। আজ থেকে প্রায় একহাজার বছর পূর্বে চিঠিটা সে তার পিতার কাছে প্রেরণ করেছিল।
শ্রদ্ধেয় আব্বু!
আপনি আপনার পত্রে উল্লেখ করেছেন- অচিরেই আপনি আমার কাছে কিছু টাকা পাঠাবেন, যাতে টাকাগুলো দিয়ে আমি ভালো চিকিৎসা নিতে পারি। কিন্তু আমার কোনো টাকার দরকার নেই। কেননা এই ইসলামি হাসপাতালে চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি! বরং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরোগ্যমুখো প্রত্যেক রোগীকে মাথাপিছু পাঁচ দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) দান করে!
হাসপাতাল ছাড়ার আগে আগেই নতুন জামা দান করে। যাতে করে একজন রোগী রোগমুক্তির সময়ে রোজগার করার মুখাপেক্ষী না হয়!
প্রিয় আব্বু!
যদি আপনি এখানে তাশরিফ আনতেন এবং আমাকে দেখতে আসতেন, তাহলে আপনি আমাকে শল্যচিকিৎসা (অপারেশন) ও গ্রন্থি চিকিৎসার (অর্থোপেডিক্স) কামরায় দেখতে পেতেন। আপনি দেখতে পেতেন, আমার কামরার পাশেই একটি গ্রন্থাগার এবং অধ্যয়ন ও সভার কক্ষ রয়েছে। এই কক্ষে প্রতিদিন চিকিৎসকরা উস্তাদদের ভাষণ (লেকচার) শুনার জন্য জড়ো হয়!
আর মহিলাদের চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ আলাদা বিভাগ রয়েছে। এটি হাসপাতালের আঙিনার দ্বিতীয় অংশে অবস্থিত। সেখানে পুরুষদের প্রবেশাধিকার নেই! আর হাসপাতাল আঙিনার ডানপাশে আপনি পাবেন এমনসব রোগীদের জন্য বিশাল বড় একটি ঘর, যারা রোগমুক্তির একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। এই ঘরে তারা রোগমুক্তির সময়টা পুরোপুরি অতিবাহিত করে। এই ঘরেও একটি গ্রন্থাগার রয়েছে!
আব্বু আমার!
এই হাসপাতালের প্রতিটি বিন্দু ও প্রতিটি জায়গা খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। ঘুমানোর বালিশগুলো হলো দামেশকের প্রস্তুতকৃত ধবধবে সাদা তোয়ালে দ্বারা গেলাফবদ্ধ। আর বিছানার চাদরগুলো নরম ও তুলতুলে মখমলের চাদর দ্বারা আবৃত!
আর হাসপাতালের সব কামরায় স্বচ্ছ ও নির্মল পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো বিশেষভাবে ফোয়ারার মাধ্যমে সরবরাহকৃত হয়ে থাকে। প্রতিটি কামরায় শীতকালে গরম করার যন্ত্র (হিটার) রয়েছে!
আর হাসপাতালের খাবার হলো মোরগের টাটকা গুশত ও শাকসবজি। এমনকি কোনো কোনো রোগী সুস্বাদু খাবারের লোভে রোগমুক্তির পরও হাসপাতাল ছাড়তে চায় না!!!
সূত্র: التفوق العلمي في الإسلام, পৃষ্ঠা: ৫২, আমির জাফর আরশিদি, মুআসসাতুর রিসালাহ, বৈরুত, লেবানন, প্রকাশকাল-১৯৯০।
শিশুর হাতে মোবাইল কতটা ভয়ঙ্কর? দূর করবেন কিভাবে?
-আরআর