শফিকুর রহমান : মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রা. মদিনার পার্শ্ববর্তী এলাকা “সানহে” বসবাস করতেন। সেখানেই ছিল খলিফার বাড়ী। একটা ক্ষুদ্র মামুলী ধরণের বাড়ী। খলিফা হবার পরও তিনি সে বাড়ী মেরামতও করাননি।
তিনি সানহে অবস্থানকালে তার পার্শ্ববর্তী দুর্বল ও অসহায় প্রতিবেশীদের ছাগলের দুধ প্রতিদিন দুইয়ে দিতেন। খলিফা হয়ে যাওয়ার পরও তিনি এ কাজ করতেন।
যখন তিনি খলিফার পদে অধিষ্ঠিত হন তখন তার প্রতিবেশীর একটি শিশু মেয়ে তাকে বলে, “এখনতো আপনি আর আমাদের ছাগল দুইয়ে দেবেন না, তাই না?”
আবু বকর রা. বলেন, “কেন দেব না? নিশ্চয় দুইয়ে দেব।” তিনি যথার্থই তাদের দুধ দুইয়ে দেয়া অব্যহত রাখলেন।
কখনো কখনো ছাগলের মালিক বালিকাকে তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, ‘খালি দুধ দুইয়ে দেব, না মাখনও বের করবো?”
কখনো সে বলতো, “মাখন বের করে দাও।” আবার কখনো বলতো, “খালি দুধ রেখে দাও।” মোট কথা সে যা বলতো, তিনি তাই করতেন।
হযরত আবু বকরের খেলাফতকালে হযরত ওমর রা. মদিনায় একটি অন্ধ মহিলার তত্বাবধান করতেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখেন, তিনি যাওয়ার আগেই কে এসে মহিলাটির কাজ করে দিয়ে যায়।
প্রতিদিন এই ঘটনা চলতে থাকল। একদিন গোপনে লুকিয়ে বসে থাকেন। দেখেন যে, হযরত আবু বকর রা. এসে মহিলাটির সব কাজ করে দিয়ে যান। খেলাফত এবং তার গুরুদায়িত্ব তাকে এ কাজ থেকে নিরস্ত করতে পারেনি। তাকে দেখামাত্র হযরত ওমর রা. চিৎকার করে বলে উঠলেনঃ “নিশ্চয়ই আপনি। খোদার শপথ আপনিই (প্রতিদিন এই কাজ করে থাকেন)।”
ইসলাম শাসক ও শাসিতের বিবেক ও মন-মগজে যে চেতনা ও দায়িত্বানুভূতি জাগিয়ে তোলে তারই প্রভাবাধীনে উজ্জীবিত হয়ে হযরত আবু বকর রা. প্রতিটি প্রজার অভাব অভিযোগ দূর করার জন্য নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী মনে করতেন।
এ দুটি ঘটনা সে কথারই প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ প্রতিজন মুসলিমকে তাদের মতো হওয়ার তাওফিক দিন।
আরও পড়ুন : নীল নদের কাছে খলিফার চিঠি…