মুমিনুল ইসলাম: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত মেয়র ও কাউিন্সিলর প্রার্থীরা। আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি নির্বাচন। শিল্পাঞ্চল গাজীপুরে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন ভোটারের মধ্যে বিরাট অংশই স্থানীয় কলকারখানা শ্রমিক।
আর এ শ্রমিক ভোটারদেরকেই টার্গেট হিসেবে নিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাই নির্বাচনের আগেই শিল্প কারখানার শ্রমিকেরা (ভোটাররা) গাজীপুরে ফিরবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। আগামী শনিবার (২৩ জুনের) মধ্যে শ্রমিকেরা ঈদের ছুটি শেষে গাজীপুরে ফিরে আসলে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।
জানা যায়, শিল্প কারখানার মালিকেরা ঈদে ১০দিন ছুটি দিয়েছেন শ্রমিকদের। অনেকে পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ আনন্দ করছেন। নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হলেও শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে শ্রমিকশূন্য থাকায় প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা কিছুটা হতাশ।
আর তাই সিটি নির্বাচনের প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার শ্রমিক ভোটারদের ঈদ উদযাপন শেষে দ্রুত গাজীপুরে ফিরে আসার জন্য বাড়ির মালিকদের আহ্বান জানিয়েছেন। মালিকদের তারা বলেছেন, আগামী দুদিনের মধ্যে যেন তাদের ভাড়াটিয়ারা ফিরে আসেন।
কোনাবাড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম জানান, তার ৪০টি ঘর শ্রমিকেদরকে ভাড়া দিয়েছেন। এই ৪০টি ঘরে ১৬০ জন শ্রমিক ভাড়া থাকেন। বিভিন্ন কলকরাখানায় চাকুরি করেন। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জন এখানে ভোটার। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরে বসবাস করে বিভিন্ন কলকারখানা ও গার্মেন্টসে চাকুরি করার সুবাদে গাজীপুরে ভোটার হয়েছেন।
গাছা এলাকর বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, অনেক শ্রমিক গাজীপুরে দীর্ঘদিন যাবত স্বামী-স্ত্রী মিলে চাকরি করার কারণে জমি কিনে বাড়িঘর করে বসবাস করছেন। তারাও গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গেছেন। আর ওইসব ভোটারদের ২৩ জুনের মধ্যেই গাজীপুরে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন প্রার্থীরা।
মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটারদের ঈদ শেষে দ্রুত ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। প্রার্থীরা পবিত্র রমজান মাসে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে যোগ দিয়ে শ্রমিক ভোটারদের ভোটের আগে ফিরে আসার কথা প্রচার করেছিলেন বলে জানান বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী ডা. মাজহারুল ইসলাম।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়সাল আহমেদ সরকার জানান, তার ওয়ার্ডে প্রায় ২০ হাজার ভোটারের মধ্যে অধিকাংশই শ্রমিক ভোটার। তারা মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। তিনিও শ্রমিকদের ঈদ আনন্দ শেষে দ্রুত গাজীপুরে ফিরে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। মোট মেয়র প্রার্থী ৭ জন। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ২৫৬ জন ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ৮৪ জন। সিটি করপোরেশনে ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৪২৫টি।