মুমিনুল ইসলাম: কক্সবাজারেরর উখিয়া টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ঈদ উদযাপনের তেমন কোনও আমেজ নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ রোহিঙ্গাদের কাছে ঈদ নিয়ে রয়েছে নানা হতাশা। ঈদের নতুন কাপড়, সেমাইসহ অন্যান্য উপকরণ কিনতে না পেরে তারা এ হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তবে প্রশাসনিকভাবে রোহিঙ্গাদের ঈদের নানা উপরকরণ ও ঈদের নামাজ আদায়ের সার্বিক প্রস্তুতি কথা জানিয়েছেন।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গাদের মধ্যে অবস্থা সম্পন্ন অনেকেই ক্যাম্প নিকটবর্তী বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা করেছেন। তবে বেশিরভাগ রোহিঙ্গারাই রয়েছে হতাশায়।
উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আয়ুব মাঝি বলেন, ‘এবারের ঈদে কোনও এনজিও এবং আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা কোনও ধরনের সাহায্য করেনি। এতে করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনেকেই হতাশায় রয়েছে। আমার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লকে ২ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গা রয়েছে। এদের অধিকাংশ তাদের সন্তানদের জন্য কোনও কাপড় ও সেমাই কিনে দিতে পারেনি।’
একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মৌলভী আব্দুর রহমান বলেন, ‘রাখাইনে ঈদ তো দূরের কথা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ারও সময় দেয়নি সেনাবাহিনী। সবসময় মনের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক কাজ করতো। কিন্তু বাংলাদেশের শিবিরে একটু কষ্ট হলেও সেই ভীতি নেই। এ কারণে আমরা অনেক সুখি আছি।’
উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নেই। রাখাইনে আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে সেনাবাহিনী। আমি চার সন্তান নিয়ে ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ঈদে কোনও সন্তানদের কাপড়-চোপড় তো দূরের কথা, খাওয়ার মতো সেমাই, চিনিও নেই।’
একই ক্যাম্পের ছবুরা খাতুন বলেন, ‘রাখাইনে থাকতে আমার স্বামী অন্যের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করে আয় রোযগাড় করতো। কিন্তু এখানে ক্যাম্প থেকে কোথাও যেতে না পারায় কোনও কাজকর্ম করতে পারছে না। এ কারণে এবারের ঈদ অন্যান্যবারের চেয়ে অনেক আলাদা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘জেলা প্রশাসন সবসময় রোহিঙ্গাদের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। উখিয়া ও টেকনাফে যে সমস্ত ক্যাম্প রয়েছে সব ক্যাম্পে ‘ডব্লিউএফপি’ ‘ইউএনসিআর’ ‘আরআরসি’ সহ বিভিন্ন সংস্থা ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছে। একই সঙ্গেসপ্তাহিক ও মাসিক রেশমও বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গারা যাতে অন্যদের মতো ঈদের নামাজ আদায় করতে পারে সেজন্য মসজিদে মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’