আওয়ার ইসলাম : ভারতের মুর্শিদাবাদে রোজা রাখা অবস্থায় এক পুরোহিতকে রক্ত দিলেন একজন ইমাম। একে অন্যের হাত ধরাধরি করে রক্তদান করার মাধ্যমে সৃষ্টি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতির আরেক অনন্য ইতিহাস।
গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানা পুলিশ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচিতে রক্ত দেন তারা।
রোজা রেখে কোনও পুরোহিতের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে ইমামের রক্ত দেয়ার ঘটনা সম্ভবত এটিই প্রথম।
তাদের রক্তদানের ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রক্ত দেন রোজা রাখা আরেক যুবক। অন্য ৭৮ জনের সঙ্গে এই তিনজনের রক্তও সংগ্রহ করে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক দল।
রোজা রেখে পুরোহিতের হাত ধরে রক্ত দান করা এই ইমামের নাম মৌলভী ইমামুদ্দিন বিশ্বাস। তিনি লালগোলা থানার রাজানগর গ্রামের জুম্মা মসজিদের ইমাম। আর পুরোহিতের নাম বিশ্বজিৎ পাঠক। তিনি শ্রীমন্তপুর গ্রামের লোকনাথ মন্দিরের পুরোহিত।
অন্যান্য মুসলমানের মতোই পবিত্র রমজান মাসের রোজা রাখেন ইমামুদ্দিন বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমি রক্ত দিয়েছি মাত্র। এর জন্য আমি শরীরে কোনও জিনিস নিইনি। রোজা থাকা অবস্থায় আমার দেয়া রক্তে কোনও বিপন্ন মানুষের উপকারে লাগলে আমার ভালোই লাগবে।
তিনি আরও বলেন, শারীরিক অবস্থার অসুবিধা না হলে রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত দেয়ার ক্ষেত্রে ধর্মে বা হাদিসে কোনও বাধা নেই। শারীরিক বা মানসিক কোনও অসুবিধাও হয়নি আমার।
অন্যদিকে মা কালীর অমাবস্যার উপবাস ছিলেন বিশ্বজিৎ পাঠক। তিনি বলেন, উপবাসের জন্য রক্ত দিতে আমার কোনও শারীরিক অসুবিধা ঘটেনি।
দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে ইমামুদ্দিন বিশ্বাসের ছয়জনের সংসার। লালগোলা থানা এলাকার পাইকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজানগর গ্রামে তিনি তার পরিবারসহ বসবাস করেন। মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের সামান্য কিছু জমি চাষ করেন তিনি।
অবিবাহিত যুবক বিশ্বজিৎ পাঠক লোকনাথ মন্দিরের পুরোহিতের পাশাপাশি লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমির হাইস্কুলের প্রহরীর চাকরি করেন।
আমাদের বিশ্বাস ও চেতনাকে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষায় একটি শক্তিমান স্বাতন্ত্র্য তৈরি হওয়া দরকার
এসএস