হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: পাকিস্তানের তাবলিগ জামাতের মুরুব্বী হাজি আবদুল ওয়াহহাব এর কাছে চিঠি লিখেছেন দিল্লির নিজামুদ্দীনের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি।
আমির ও আলমি শুরা নিয়ে দুজনের মধ্যে বিভক্তির মধ্যে এ চিঠি ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। রমজান উপলক্ষ্যে এ চিঠি মাওলানা সাদ কান্ধলভি লিখেছেন বলে জানা যায়।
চিঠিতে তিনি বিভক্তি নিরসনের জন্য কিছু না বললেও নিজামুদ্দিনের প্রশংসা করে সেখানে আসা বিদেশি জাতামের সংখ্যা উল্লেখ করে তার প্রশংসা করেছেন।
চিঠিতে তিনি লিখেন, সম্মানিত হাজি আবদুল ওয়াহহাব সাহেব ও রায়বেন্ডের মশওয়ারার অন্যান্য সাথীবর্গ! আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের আল্লাহর মর্জি মোতাবেক কাজ করার তাওফিক দান করুন।
পর কথা, মহান আল্লাহর কাছে আশা করছি, আপনি সাথীদের নিয়ে সুস্থ ও ভালো অাছেন।আল্লাহ আপনাদের হায়াতে বরকত দান করুন এবং দীনের মহান দাওয়াতি কাজের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত কবুল করুন।
বাংলাদেশ-ভারতের আলেমদের ইলমি সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে দেওবন্দের চিঠি
এখানেও (নিজামুদ্দিন মারকাজে) সবাই ভালো আছে এবং সব সাথী হাজি সাহেবের সুস্থতার জন্য দোয়া করছে৷ গত মাসে হাজি সাহেবের স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে খুশি হয়েছি৷ আমরা দোয়া করি, হাজি সাহেবের উত্তরোত্তর সুস্থতা বৃদ্ধি পাক৷
আপনাদের দোয়ার বরকতে গত মাসে দেশি বিদেশি তাবলিগি সাথীদের সমাগম খুব বেশি ছিলো৷ আল্লাহর শোকর গত মাসে ৬৫০০ জন দীনি মেহমান বহির্বিশ্ব থেকে মারকাজে এসেছেন৷ আর ভারত থেকে ২০০ জামাত বাইরের রাষ্ট্রগুলোতে দীনের মেহনতের জন্য বের হয়েছেন৷ আল্লাহই উত্তম তাওফিকদাতা৷
শাবান ও রমজানুল মোবারক মাসে হিন্দুস্তানের প্রদেশগুলো থেকে অধিক পরামাণে মাদরাসার ছাত্র ও আম সাথীগণ জামাতবদ্ধ হয়ে এসেছেন৷ তাদের মাঝে উমুমি তাশকিল হয়েছে৷ বিভিন্ন জায়গায় জামাত পাঠানো হয়েছে৷
https://www.facebook.com/MarkazNizamuddinWorldwideDawatotableeghMarkaz/photos/rpp.690378260997066/1938804776154402/?type=3&theater
রমজান মাস সংক্রান্ত হজরতজি মাওলানা ইউসুফ রহ.এর চিঠিও পাঠানো হয়েছে৷ বিশেষভাবে দাওয়াত ও তালিমের মাধ্যমে মসজিদগুলো আবাদ করার খুসুসি মেহনত ও ফিকির করা হচ্ছে৷
আল্লাহ তায়ালা যেন জেনে বুঝে ইয়াকিনের সাথে দীনের মেহনত করার তাওফিক দান করেন৷ আপনাদের কাছে দোয়ার দরখাস্ত৷
সালামান্তে
বান্দা মুহাম্মদ সাদ
আহবাবে শুরা, বাংলাওয়ালি মসজিদ, দিল্লি৷
৩ রমজান ১৪৩৯ হিজরি, মোতাবেক ১৯ মে ২০১৮
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে পাকিস্তানে রায়বেন্ডের ইজতেমার পর নিজামুদ্দীন মারকাজের মুরুব্বীদের একাংশের অনুরোধে হাজি আবদুল ওয়াহহাব আলমি শুরা গঠনের লক্ষ্যে মজলিসের আহ্বান করেন। কিন্তু নিজামুদ্দীনের কিছু সাথীর বিরোধিতার ফলে কোন সিদ্ধন্ত ছাড়াই সে মজলিস শেষ হয়।
পরবর্তীতে নিজামুদ্দীন ও রায়বেন্ডের পুরাতন মুরুব্বীগণ বসে একটি খসড়া তৈরি করে সেখানে আলমি শুরার জন্য কিছু নামও প্রস্তাব করা হয়।
এ খসড়া হাজি সাহেবের কাছে পেশ করা হলে তিনি তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দস্তখত করেন। পরে চূড়ান্ত করার জন্য মাওলানা সাদ কান্ধলভির কাছে পাঠানো হলে তিনি তা রদ করে দেন এবং সেখানে দস্তখত করতে অস্বীকৃতি জানান। তার কাছে পর পর ৩ বার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তাতে রাজি হন নি। তিনি তখন বলেছেন, শুরার প্রয়োজন নেই। যেভাবে কাজ চলছে সেভাবে চলতে দিন।
এরপর হাজি সাহেব নিজামুদ্দীনের অন্য মুরুব্বীদের স্বাক্ষর নিয়ে তা লিখিত আকারে বিভিন্ন এলাকায় ও অনেক বাইরের রাষ্ট্রেও প্রেরণ করেন এবং সেখানে তিনি বলেছেন, আমি আলাদা কোন শুরা গঠন করিনি, বরং হজরতজি এনামুল হক রহ. এর সময়ে যে শুরা ছিলো তা-ই নবায়ন করেছি। কেননা, তখনকার ১০ সদস্যের কয়েকজন আল্লাহর ডাকে পরপারে চলে গিয়েছেন।
হাজি আবদুল ওয়াহহাব বিশ্ব তাবলিগের অন্যতম মুরুব্বী। তিনি হজরতজি মাওলানা ইউসুফ রহ. হজরতজি মাওলানা এনাম রহ. এর একান্ত সোহবতে ছিলেন।
এ বিষয়ে মাওলানা তারিক জামিলের বক্তব্য শুনুন নিচের ভিডিওতে