কাউসার লাবীব: মাদকের বিরুদ্ধে সারা দেশে ব্যাপক অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির ভিত্তিতে এ অভিযান চলছে। বিবিসির গতকালের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় ‘বাংলাদেশে পুলিশ ও র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে ১৬ দিনে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে ১৮ জন।
তাছাড়া আজ রোববার র্যাব ফোর্সসের উদ্যোগে রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে ‘চলো যাই যুদ্ধে; মাদকের বিরুদ্ধে’ লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্ধোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে। এটা অবহ্যাত রাখা হবে, যতদিন পর্যন্ত মাদক ব্যবসা ও সেবন নির্মূল না হবে।
সব মিলিয়ে মাদক বিরোধী অভিযানে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। সরকারের এ পদক্ষেপ সমাজের কর্ণধার ওলামায়ে কেরাম কীভাবে দেখছেন!
এ বিষয়ে ঢাকার লালবাগ জামেয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া’র মুদাররিস ও তরুণ আলেম মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সরকারের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এপথে সরকার আরো আগে হাঁটলে আরো ভালো ফল বয়ে আনত।
তিনি বলেন, ইসলাম গোড়া থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে। সেজন্য আমরা ওলামায়ে কেরাম মসজিদে মাদরাসায়, বয়ানের মঞ্চে মানুষকে সবসময় সচেতন করে থাকি।আশা করি সরকারের এ অবস্থানের কারণে আমাদের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে এবং মাদকমুক্ত একটি সমাজ গঠনে আমরা এগিয়ে যাব।
তিনি আরা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার জন্য যে ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটছে তা না ঘটলেও হতো। তাদেরকে এতো কঠিন অবস্থার মুখোমুখি না করে সংশোধনের পথে নিয়ে এলেই তারা পাবে সুন্দর জীবন আর আমরা পাবো সচেতন নাগরিক।
মাদকের প্রবণতা দিনদিন বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে মুফতি সাখাওয়াত আওয়ার ইসলামকে বলেন, এর কারণ, সরকার ইতোপূর্বে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে এখন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যদি লোক দেখানো না হয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে হয়ে থাকে তাহলে মাদকের প্রবণতা আর বাড়বে না ইনশাআল্লাহ। কেননা মাদকের যত আখড়া আছে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নখদর্পণের বাইরে নয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমানের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানকে ফলপ্রসূ করে তুলতে ইমাম খতিবদের কী ভূমিকা রাখা উচিৎ, এমন প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ইমাম খতিবগণ বড় একটি ভূমিকা পালন করতে পারেন।
তিনি বলেন, জুমার দিন মুসল্লিগণ যেভাবে মনোযোগের সঙ্গে ইমাম সাহেবের কথা শোনেন, কোনো সভা-সেমিনারে মানুষকে এমন মনোযোগী দেখা যায় না। আমরা ইতোপূর্বেও দেখেছি, জুমার বয়ানে যেসব ইস্যুতে ইমাম-খতিবগণ মানুষকে সচেতন করেছেন তার ভালো ফলাফল সমাজ পেয়েছে।
‘প্রত্যেকটি জুমায় যদি মাদকের ভয়াবহতা, পরিণাম সম্পর্কে সচেতন করা যায় তাহলে আমাদের সমাজ থেকে ধীরে ধীরে মাদকের প্রবণতা কমে আসবে বলেই বিশ্বাস করি।’
মাদকের অবাধ বিস্তার আরো কমে আসার পথ খোলা আছে উল্লেখ তিনি বলেন, মাদক প্রতিরোধে সরকারের যথেষ্ট পরিমাণ আইন রয়েছে। সে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ইনশাআল্লাহ শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।
‘নতুন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে না। আমাদের দেশে যেসব চোরাপথ দিয়ে মাদকের অনুপ্রবেশ, সে সম্পর্কে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবগত আছেন। তারা এসব রুখে দিতে বেশ আন্তরিক, তবে এ আন্তরিকতা যদি তারা আরো বাড়িয়ে দেন তাহলে আমাদের সমাজ মাদকের অভিশাপ থেকে চিরতরে মুক্তি পাবে।’
মাদক বিরোধী অভিযানের ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টি কতটা ফলপ্রসু হবে জানতে চাওয়া হলে, ডেমরা সারুলিয়া দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা অধ্যক্ষ আ খ ম আবু বকর সিদ্দীক আওয়ার ইসলামকে বলেন, বিষয়টি খুব ভালো এবং সময় উপযোগী উদ্যোগ। তবে সবকিছুর আগে যদি মাদকের অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করা হয়, তাহলে ব্যক্তি পর্যায়ে মাদক সেবনের প্রবণতা বন্ধ হবে।
সেলাই করে পূর্ণ কুরআন লিখে ইতিহাস গড়লেন নাসিমা অাখতার! (ভিডিও)
ধর্ষণের পর পরিবারকে এলাকা ছাড়ার হুমকি; ৯৯৯ কলে রক্ষা (ভিডিও)