এম মইনুল এহসান : ভোলায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির টাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিল্লাল হোসেন (৩০) নামের হীড বাংলাদেশের এক মাঠকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ মে) দুপুরে সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের হাজীরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিল্লাল সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের টবগী স্কুল এলাকার মোঃ লুৎফর রহমানের ছেলে।
পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুলু আরা বেগমকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে হীড বাংলাদেশ ভোলা সদর উপজেলা শাখার মাঠকর্মী মোঃ বিল্লাল হোসেন কিস্তির টাকা আদায় করতে আলীনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত মোঃ অজিউল্লাহ মুন্সীর স্ত্রী গ্রাহক দুলু বেগমের বাসায় যায়।
সম্ভবত এসময় দুলু বেগম ও তার ছেলে মোঃ বিল্লালের সাথে এনজিও কর্মী বিল্লালের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে গ্রাহক এনজিওকর্মী বিল্লালকে ধারালো ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। বিল্লাল জীবন বাঁচাতে পাশের বাড়ির উঠানে এসে মাটিতে লুটিয়ে পরে মারা যায়।
বিল্লালের এ অবস্থা দেখে ওই বাড়ীর হামিমা বেগম আত্মচিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এসে জড়ো হয়। পরে পুলিশে খবর দিলে ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছগির আহমেদ এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা এনজিওকর্মী বিল্লালকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুলু আরা বেগমকে পুলিশ আটক করে । আটককৃত দুলু বেগমের শরিরের বিভিন্ন স্থানে রক্তের ছিটার দাগ দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনার পর দুলু বেগমের ছেলে রাজমিস্ত্রী বিল্লাল পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় হামিমা বেগম বলেন, দুপুরের দিকে আমি বারান্দায় বসে খাতা সেলাই করেছিলাম। হঠাৎ দেখি এনজিও কর্মী বিল্লাল পাশের বাড়ি থেকে আমাদের উঠানে এসে আমাকে বাঁচাও বলে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পরে। এ অবস্থা দেখে আমি ডাকচিৎকার দিলে এলাকার লোকজন আসে ঝড়ো হয়। ততক্ষনে বিল্লাল মারা যায়। পরে আমরা পুলিশে খবর দেই।
হীড বাংলাদেশের মাঠকর্মী রিকতা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি ও বিল্লাল কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য আলীনগর ইউনিয়নে আসি। আমি অন্য গ্রাহকের বাসায় কিস্তির টাকার জন্য যাই এবং বিল্লাল দুলু বেগমের বাসায় যায়।
কিছুক্ষন পরে আমি বিল্লালের হত্যার ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে এসে তার শরীরে ছুরি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই।
হীড বাংলাদেশ ভোলা শাখার ম্যানেজার যগদীশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমাদের এনজিও মাঠকর্মী বিল্লাল হোসেন কিস্তির টাকার জন্য গ্রাহক দুলু বেগমের বাসায় যায়। সেখানে কিস্তির টাকা নিয়ে দুলু বেগম ও তার ছেলে বিল্লালের সাথে মাঠকর্মী বিল্লাল হোসেনের কথা কাটাকাটি হয়।
গ্রাহক বিল্লাল ধারালো ছুরি দিয়ে মাঠকর্মী বিল্লালের পেটে আঘাত করলে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের বিচার দাবী করছি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছগির আহমেদ জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে নিহতের লাশ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করেছি। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে দুলু বেগমকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের টবগী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মোঃ লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন ৭ বছর ধরে হীড বাংলাদেশ ভোলা শাখায় চাকুরী করে আসছেন। তার মৃত্যুতে লুৎফর রহমানের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
আরআর