সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘কওমি শিক্ষাকে কর্মসংস্থানের মাধ্যম মনে করা হলে তা আর ইবাদত হিসেবে টিকে থাকবে না’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম
আওয়ার ইসলাম

আগের তুলনায় ব্যাপকহারে বাড়ছে কওমি ফারেগ তরুণ আলেমদে সংখ্যা। সারাদেশে হাজার হাজার কওমি তরুণের অনেকেই দাওরায়ে হাদিস শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। কেউ আবার ইসলামি ফিকহ বা অন্য বিষেয়ে নিচ্ছেন উচ্চশিক্ষা।

কওমি তরুণদের অধিকাংশই মসজিদ মাদরাসাকেন্দ্রিক কর্মসংস্থানে আগ্রহী হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দিন দিন যে কওমি তরুণদের কর্মসংস্থানের যায়গাটা ছোট হয়ে আসছে তা সবার জানা। কেননা, প্রতি বছর হাজার হাজার অালেম ফারেগ হলেও সে অনুযায়ী বাড়ছে না মাদরাসা মসজিদ।

কওমি তরুণদের কর্মসংস্থান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয় ৩ জন আলেমের সঙ্গে। আজ জানুন কওমি মাদরাসার মুহাদ্দিস, পীর এবং একই সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবি ড. মাওলানা মুশতাক আহমদের কথা।

কওমি তরুণদের কর্মসংস্থান বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমত আমাদের চিন্তা করতে হবে কোনো  শিক্ষাব্যবস্থাই কর্মসংস্থানের মাধ্যম হতে পারে না। সে হিসেবে মাদরসায় পড়ানো এটাও উপার্জনের পেশা হতে পারে না।

কওমি মাদরাসার পঠনপাঠনের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে ইবাদত। কেননা, দীনের ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ। তো একটি ফরজ কাজ কী করে উপার্জনের মাধ্যম হতে পারে?

কওমি শিক্ষাকে যদি কর্মসংস্থানের মাধ্যম মনে করা তাহলে তা আর ইবাদত হিসেবে টিকে থাকবে না৷ বরং ধীরে ধীরে কওমি ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা তার স্বকীয়তা হারাবে৷

দ্বিতীয় কথা হলো, কওমি শিক্ষার উদ্দেশ্য যতোটা ব্যাপক হওয়া দরকার ছিলো তা সমাজে প্রচলিত নেই৷ এ ক্ষেত্রে শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন ছিলো৷

দু শ' বছর আগের সামাজিক অবস্থা আর আজকের সমাজ ব্যবস্থায় আকাশ পাতাল ব্যবধান৷ সে হিসেবে কওমি শিক্ষা সিলেবাস আরো উপযোগী ও সমন্বিত হওয়া প্রয়োজন৷ এটা না হওয়ায় অনেক সময় কর্মসংস্থানগত সংকট দেখা দেয় বা তরুণ ক্ষেত্র পায় না৷

অপরদিকে কওমি প্রতিভা ও মেধারও অপচয় হচ্ছে৷ অনেক মেধাবী অন্য সবার মতো গতানুগতিক শিক্ষাবর্ষ সমাপন করে যাচ্ছে৷ তাদের মেধা আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করা জরুরি৷ এতে দীন, দেশ সবার উপকার হবে৷

হজরত মুহাম্মদ সা. যেমন বিশ্বব্যাপী নৈতিক উন্নয়নে কাজ করেছেন, পৃথিবীকে মানবতার সবক শিখিয়েছেন ঠিক তেমনি একজন নায়েবে নবীরও বিশ্বব্যাপী চিন্তার প্রসার দরকার৷

বিশ্বকে নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলি, ইনসানিয়ত শিক্ষা দেয়ার ফিকির করা৷ সে লক্ষ্যেই শিক্ষাব্যবস্থায় বিশ্বায়নের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত৷ তখন এমনিতেই নানা কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে৷

ইনস্টল করুন ইসলামী যিন্দেগী

উচ্চ শিক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, দাওরা পর্যন্ত হলো বেসিক পড়ালেখা৷ এটা সবাই করবে৷ কিন্তু কিছু মেধাবীকে বিষয়ভিত্তিক উচ্চ শিক্ষায় ব্রত হওয়া চাই৷ এখন যে কয়টা বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়৷

আরো উপযুক্ত বিষয়কে উচ্চশিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা যায়৷ তখন কাজের নানা সেক্টর তৈরি হবে৷ এ ক্ষেত্রে বেফাকসহ বোর্ডগুলো উদ্যোগী হতে পারে৷ এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বটাই বেশি৷

তরুণদের ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু তরুণ ব্যবসা বাণিজ্যে যেতে পারে, অন্য হালাল কাজেও যেতে পারে৷ তবে তা হতে হবে নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রেখে৷

বাইরের সাথে নিজেদের মিশিয়ে ফেললে চলবে না৷ ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা সামনে রেখে তরুণরা নানা উদ্যোগও গ্রহণ করতে পারে৷ এ ক্ষেত্রে সর্বদাই আলেম বা নিজ শিক্ষকদের পরামর্শ সঙ্গে রাখতে হবে৷ সব ক্ষেত্রে ইসলামের দাওয়াতের মানসিকতা থাকাটাও জরুরি৷

বিদায়ী মুহূর্তে কিছু কথা কওমি ছাত্রদের প্রতি

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ