সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


রমজানের পূর্ণাঙ্গ ফায়দা অর্জন করতে এখনই যা করণীয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম
আওয়ার ইসলাম

মাহে রমজান। রহমত বরকত আর নাজাতের মাস। এ মাস ঘিরে মুসলমান বান্দাদের গোনাহ মাফ করেন আল্লাহ তায়ালা। বান্দারাও রহমত মাগফেরাত আর নাজাত নিতে মহান রাব্বুল আলামিনের দুয়ারে হাত পাতেন ভিক্ষুকের মত।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন খুশিও হন বান্দা যখন তার দরবারে হাত তুলে ফরিয়াদ করেন। আসছে রমজান। রমজানের প্রস্তুতিতে এখনই যে বিষয়গুলো করা জরুরি এ নিয়ে দুজন আলেমের মতামত তুলে ধরা হলো।

রমজানের প্রস্তুতিতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লার বিশ্বরোড দাওয়াতুল হক মাদরাসার মুহাদ্দিস, বামিশা গোপলনগর বড় মসজিদের খতিব মাওলানা হাফেজ জামিল বিন আশরাফ বলেন, আমার বাবা আল্লামা আশরাফ আলী রমজান এলে প্রায়  বলেন, তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও।

আল্লাহ তায়ালা হাদিসে কুদসিতে বলেছেন, ‘অাস সাওমু লি আনা আজযিউ বিহি’ রোজা আমার জন্য আর আমিই তার প্রতিদান দেবো। তাই রমজান আসার আগেই রোজা রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা আবশ্যক।

মাহে রমজানের বরকতময় মুহূর্তগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক কিছু করণীয় রয়েছে।

মাহে রমজানকে সামনে রেখে সর্বপ্রথম মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। বরকতময় এ মাসকে কীভাবে অতিবাহিত করবো, অন্য সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত কী করবো এবং স্বাভাবিক আমলের অতিরিক্ত আর কী আমল হবে? সে পরিকল্পনা এখন থেকে ঠিক করে নেয়া প্রয়োজন।

বড় ধরনের কোনো সফর থাকলে তা রমজানের আগেই করে ফেলা যায় কিনা, সে চেষ্টা করা। যাতে রোজা রেখে কষ্ট করতে না হয়।

ঈদের কেনাকাটা রমজানের আগেই করে ফেলার চেষ্টা করা। তাহলে মাহে রমজানে সময়ের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।

পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করা। কুরআন তিলাওয়াত না জানলে শেখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

একই বিষয়ে কুমিল্লা চৌয়ারা বাজার কলেজ মসজিদের খতিব ও লইপুরা মাদরাসার মুহাদ্দিস ডা. মাওলানা কাশেম মজুমদার বলেন, রাসুল সা. রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত দীর্ঘায়িত করার জন্য দোয়া করেছেন। বান্দাদের দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগুনা রমাজান।

হে আল্লাহ রজব শাবান মাসে বরকত দান করুন আমাদের হায়াত রমজান পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করুন।

তিনি আরো বলেন, রমজান এমনই এক বরকতময় মাস, যার আগমনে পুলকিত হয়ে স্বয়ং রাসুল সা. সাহাবায়ে কিরামকে মুবারকবাদ দিয়ে সুসংবাদ প্রদান করে বলেছেন, ‘তোমাদের সামনে রমজানের পবিত্র মাস আগমন করেছে, যে মাসে আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর রোজা ফরজ করেছেন।’ সহিহ মুসলিম

সেই সঙ্গে রমজানের পূর্বে প্রস্তুতি হিসেবে অধিক পরিমাণে দান-সদকা করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। প্রয়োজনে দান-সদকার জন্য অর্থ সঞ্চয় করে রাখা যেতে পারে।  গুরুত্বপূর্ণ দুআ ও তাসবিহসমূহ রমজানের পূর্বেই শিখে নেয়ার চেষ্টা করা।

কুমিল্লা জামিয়া মাদানিয়া রওজাতুল উলূম মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতি নেয়ামতুল্লাহ ফরিদীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রমজান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের প্রতি বিশেষ এক নেয়ামত। এ নেয়ামতের কদর বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে হলে অবশ্যই এ মাহে রমজানের রোজা রাখাসহ আল্লাহর থেকে গুনাহ মাপ করে নেয়া বান্দাদের কর্তব্য।

তাই রমজান আসার পূর্বেই রাসুল সা. দোয়া করতেন যেনো আল্লাহ রমজান মাস পর্যন্ত আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন, হায়াত দান করেন।

রমজানের পূর্বেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা। বেশি বেশি ইসলামি বই-পত্র অধ্যয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সময় সুযোগ থাকলে রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করার নিয়ত করা যেতে পারে। কোনো বদ অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করার বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে।

বস্তুত যে কোনো কাজেরই পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া তা ভালোভাবে আদায় করা সম্ভব হয় না। এ কারণে রমজানের বাড়তি নেকির কাজগুলো করার জন্যও আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি জরুরি। তাহলে আমরা ইবাদতের জন্য সে সময়টুকু বাঁচিয়ে রাখতে পারবো।

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে রমজানে বেশি বেশি ইবাদতের তওফিক দিন। উপকারী পোস্টটি শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ