আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যে প্রার্থীদের প্রচারণা চলছে জোরছে। একই সঙ্গে গাজীপুর সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হাইকোর্ট সেটি স্থগিত করে দিয়েছে।
খুলনা সিটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি লড়ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আর কোনো ইসলামি রাজনৈতিক দল এখানে প্রার্থী না দেয়নি। তবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনে রয়েছে।
সে হিসেবে খুলনা সিটিতে একমাত্র আলেম প্রার্থী হিসেবে হাতপাখা মার্কায় লড়ছেন ইসলামী আন্দোলন মনোনীয় প্রার্থী মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক।
মাওলানা মুজাম্মিল খুলনা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহানগর সভাপতি। খুলনার কারিমিয়া মাদরাসার মুহতামিম। এছাড়াও একটি মসজিদের ইমাম ও খতিব তিনি। দীর্ঘ দিন ধরেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়।
সিটি নির্বাচন সামনে রেখে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আওয়ার ইসলামের খুলনা প্রতিনিধি মুজাহিদুল ইসলাম।
এমন কোন সূচক আপনার কাছে রয়েছে, যার কারণে আপনি মনে করছেন, নগরবাসীকে আপনিই সেরা সেবাটা দিতে পারবেন?
মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক: আলহামদুলিল্লাহ, আমি আসন্ন খুলনা সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দেলনের পক্ষ হতে চরমোনাই পীর সাহেব কর্তৃক মনোনীত মেয়র প্রার্থী।
এ নির্বাচনকে আমরা ইবাদাতের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছি, মানবতার কল্যাণে ইসলামের পক্ষে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণের জন্যই আমাদের এ নির্বাচন। যেহেতু জনগণের সেবা করা আমাদের কাছে অনেক বড় ইবাদাত, আর ইবাদাত তো সব থেকে সুন্দরভাবে করতে হবে, যা আমরাই ভালভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।
ধর্মীয় পরিমণ্ডলের মানুষ শুধু ধর্মীয় ইস্যুতে সোচ্চার; সামাজিক কাজের লোক নন, এ দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত আওয়াজ কি তবে আপনারা ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
ধর্মীয় ইস্যুর ভাবার্থকে আমরা খুবই সংকুচিত করে ফেলেছি, কারণ জনগণের চাওয়া পূরণ করা এটাও ইসলামের নীতি ও আদর্শ।
তো ধর্ম লালন-পালনের অংশ হিসেবেই আমরা জনগণের চাওয়াকে পূরণ করবো, যেমন মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস মূলৎপাটনের ব্যাপারে আমরা সুজনের অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি, আর ইসলাম এটা প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর। যা আমরা সবসময় করেই আসছি।
খুলনা সিটির কোন সমস্যাগুলো আপনারা সমাধান করতে চান?
আমরা মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, রাস্তাঘাট বেহাল দশা, জলাবদ্ধতা ও মশার উপদ্রবের পাশাপাশি ইজি বাইক, ইন্জিনচালিত রিকশা-ভ্যানের সমস্যার মতো বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছি আমরা। এসবের সমাধান করতে চাই।
আপনারা যেহেতু রোলিং পার্টিতে নেই, তাই প্রতিশ্রুতি পালনে কতটা সক্ষম হবেন?
জনসেবায় চ্যালেঞ্জ তো আসবেই, তবে আমি নির্বাচিত হলে নাগরিকের নাগরিক অধিকার প্রদানে যে কোনো বাধা উপেক্ষা করে তা নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।
ভোটারদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন? পাশাপাশি ভোটাররা আপনাকে তাদের সেবা করার সুযোগ দিবে বলে আপনি কতটা আশাবাদী?
নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি বিজয়ী হওয়ার জন্যই। আমরা জনগণের অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি; তাদের মাঝে আমরা পরিবর্তনের আবহ দেখতে পাচ্ছি, ইসলামের জন্য ও মানবতার কল্যাণের জন্য তারা ইসলামী আন্দেলনের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার চিন্তা করছে।
প্রচারণায় ব্যস্ত মাওলানা মুজাম্মিল হক
নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে বলে ইসলামী আন্দোলন মনে করছে এবং এ ক্ষেত্রে কী প্রতিবন্ধকতা আছে আর এর সমাধানে আপনাদের কোনো প্রস্তাবনা আছে কি না?
আসলে এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, আমাদের দেশে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন খুব কমই হয়ে থাকে, আমরা বারবার দেখছি, ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্র দখল, ভোটারদের ভোট আগে থেকেই কাস্ট হওয়া, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা এবং প্রশাসনের মাধ্যমে নিজেদের মতো করে ফলাফল তৈরি করা।
তবে এ সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আমাদের কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের কোনো বাধা আসেনি, তবে মূল বিষয়ের মূল্যায়ন নির্বাচনের দিনই করা যাবে। তবে পূর্বের রেকর্ড অনুসারে আশঙ্কা থেকেই যায়।
ব্যস্ততার মাঝেও আওয়ার ইসলামকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
সাক্ষাৎকার নিতে আসায় আমরাও খুবই খুশী হলাম। ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: খুলনায় ইসলামি আন্দোলনে’র ইশতেহার ঘোষণা
-আরআর