সম্মিলিত কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে আজ থেকে শুরু হয়েছে দাওরা হাদিস পরীক্ষা। এ বোর্ডের অধীনে এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিতীয় পরীক্ষা।
দাওরা হাদিসকে মাস্টার্স সমমানের স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণার পর বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে গত বছর অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রথম পরীক্ষা।
দেশের ৬টি কওমি শিক্ষাবোর্ডের ২০৭৪৮ জন শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ পরীক্ষা নিয়ে ঢাকার জামিয়া শরঈয়্যাহ মালিবাগের পরীক্ষা কেন্দ্রের হল প্রধান ও আশরাফিয়া মাহমুদুল উলুম দক্ষিণখান মাদরাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা আবু উসামা মো. হাবীবুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলাম প্রতিনিধি সুলাইমান সাদী।
ক্যামেরায় ছিলেন মুমিনুল ইসলাম।
আপনার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জামিয়া শরঈয়্যাহ মালিবাগ কেন্দ্রের পরীক্ষা। এখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাই।
আলহামদুলিল্লাহ। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো আল হাইআতুল উলয়া তাকমিল জামাতের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছি। আমাদের এ হলের পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে এ একটি ম্যাসেজ দিতে চাই, একবিংশ শতাব্দীতেও সরকারের সহায়তা ছাড়া, পুলিশের সাহায্য ছাড়াও, শান্তিপূর্ণভাবে, নকলবিহীন, প্রশ্নপত্র ফাঁস করা ছাড়াও আদর্শ পরীক্ষা নেয়া যায়।
অন্যান্য দেশ, যেমন ভারত বা পাকিস্তানের কথা যদি বলি, সেখানে কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষাবোর্ডগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা বা পরীক্ষাপদ্ধতি রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রশংসিত হচ্ছে এবং অনুসরণযোগ্য বলে আখ্যায়িত হচ্ছে, মিডিয়ায় এ নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে সেখানে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মাদরাসা বোর্ডগুলোর পদক্ষেপ কী হতে পারে?
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও সুনাগরিক। এরা লেখাপড়া করছে। এদের সার্টিফিকেটের মূল্যায়ন হওয়ার দ্বারা সরকারের শিক্ষার হার দ্রুতই একধাপ এগিয়ে গেছে।
কারণ, যে বিশাল জনগোষ্ঠী এতোদিন লেখাপড়া করার পরও মসজিদে মসজিদে এরা বক্তব্য রাখছে ঠিকই কিন্তু সরকারের খাতায় এরা অশিক্ষিত ছিল। সরকার এদের সার্টিফিকেটকে মূল্যায়িত করে তাদের শিক্ষার হার বাড়িয়ে নিল।
সরকার কওমি মাদরাসা শিক্ষার স্বীকৃতি দিয়েছে। এ স্বীকৃতি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে তরুণ প্রজন্ম কেমন উপকৃত হবে বলে আপনি মনে করেন?
ইসলামের নবী মুহাম্মদ সা. দুনিয়াকে পরকাল থেকে ভিন্ন করে দেখেননি। দুনিয়াতে মানুষ একটু ভালো অবস্থানে থাকুক এবং সুন্দর অবস্থানে থেকে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের খেদমত করুক এটা সবারই কাম্য।
যখন শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটের মূল্যায়ন হবে তখন তারা সরকারের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবে। তার ইহকাল যখন আবাদ হবে, সুন্দর হবে তখন সে শান্তিতে পরকালের কাজগুলোও নৈতিকতার ভিত্তিতে করতে পারবে।
আজ প্রথম পরীক্ষা। বাকি পরীক্ষাগুলোর প্রস্তুতির জন্য ছাত্রদের আপনি কী পরামর্শ দেবেন ?
এ ব্যাপারে আমার অভিমত হলো, শিক্ষার্থীরা আজ যেভাবে পরীক্ষা দিচ্ছে এভাবে শান্তিপূর্ণভাবে খুব ঠাণ্ডা মাথায় কিতাবগুলো পড়ে আসা এবং হলে আসার পর আত্তাহিয়াতুর সুরতে বসে সবাই সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিক। তারা ভালো ফলাফল করুক এটাই আমাদের কাম্য।
ভিডিও দেখুন