আবদুল্লাহ তামিম: ল্যাটিন আমেরিকার একটি দেশের নাম হন্ডুরাস। দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের ইবাদতের জন্য মাত্র দুটি মসজিদ রয়েছে। এই দুটি মসজিদের মধ্যে একটি নীল রঙ্গে সুসজ্জিত করা হয়েছে। এই মসজিদটি পরিদর্শন এবং সেখানে নামাজ আদায়ের জন্য অনেক কয়েক ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
হন্ডুরাস একটি গির্জার দেশ। দেশটিতে অনেক গির্জা রয়েছে - সান্তা রোসা ডি ক্যাপোন শহরে ক্যাথলিক ক্যাথিড্রাল, সান পেড্রোসুলা শহরে সেন্ট পিটার্স চার্চ, তেগুসিগালপা শহরে পবিত্র লিটারডি চার্চ। তবে সেদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সান পেড্রোসুলার একটি শান্ত রোডে একটি ব্যতিক্রম ধরনের পবিত্র ভবন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।
এই মনোরম মসজিদের অর্ধেক অংশই পাম গাছে আবৃত হয়ে আছে। মসজিদের গুম্বজ ও মিনারের উপরে বেশ কয়েকটি চাঁদ রয়েছে। প্রতি শুক্রবার এই মসজিদ থেকে অনেক দূরও আযানের সুমধুর কণ্ঠ শোনা যায়।
এটি সান পেড্রোসুলা শহরের একমাত্র মসজিদ। হন্ডুরাসের অনেক মুসলমানেরা বহু দুর থেকে শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করার জন্য এই মসজিদে ভিড় জমায়। ২০০৯ সালের জরিপ অনুযায়ী ঐ অঞ্চলের মুসলিম নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার।
গ্রিফোনা শহরের একজন জেলে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য প্রায় ৩ ঘণ্টা ড্রাইভিং করে এই মসজিদে উপস্থিত হন। ২৬ বছর পূর্বে তিনি খৃষ্টান থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিশ্বাস করেন "আমরা সকলেই মুসলমান"।
এই শহরে মসজিদ নির্মাণের পূর্বে এক ব্যক্তি মুসলমান হন; তিন বলেন: এই মসজিদটি নির্মাণের পূর্বে হাসপাতালের নিকটে একটি ছোট কক্ষ ছিল। আমরা সেখানে নামাজ আদায় করতাম। একটি অমুসলিম দেশে সংখ্যালঘু মুসলমানেরা ছোট কক্ষে নামাজ আদায় করবে এটা কোন নতুন বিষয় নয়।
যেমন; ইতালির বেশ কিছু শহরে সংখ্যালঘু মুসলমানেরা গুদামঘর, পরিত্যক্ত ভবন ও দোকানে নামাজ আদায় করেন। হন্ডুরাস দীর্ঘদিন কোন মসজিদ ছিল না। তবে এখন সেদেশে দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি সান পেড্রোসুলা শহরে এবং অপরটি তেগুসিগালপা শহরে অবস্থিত। হন্ডুরাসে আরবদের পুনর্বাসনের পর, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আরবরা এই অঞ্চলে তিন ধাপে অভিবাসন করে।
প্রথম ধাপ ১৮৯৫ থেকে ১৯১৫ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের সংকটের কারণে এবং দ্বিতীয় ধাপ ১৯২৫ থেকে ১৯৪০ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে এবং তৃতীয় ধাপ ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সালে হন্ডুরাসে ভিসার আবেদন সহজতর করার জন্য সেখানে আরবরা স্থানান্তর করে।
হন্ডুরাস একটি ধর্মের স্বাধীনতা সম্পন্ন দেশে। সেদেশের সরকার শুধুমাত্র ক্যাথলিক চার্চ স্বীকৃত দিয়েছে। অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধর্মীয় সংগঠন হিসাবে স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন- সকাল সন্ধ্যায় নবীজি যে আমলটি করতেন