আওয়ার ইসলাম: কাতারের ৭০ শতাংশ মানুষই প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের স্থূল মানুষের দ্বিগুণের বেশি মানুষ এদেশে অতিরিক্ত ওজনের।
দেশটির প্রতি দশজনে সাতজনই স্থূলকায়। এবং প্রতি পাঁচজনে একজন ডায়াবেটিসে ভুগছেন ।দেশটির জাতীয় হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় আলডানা আল-খুলাইফি মনে করেন, এই সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
২৬ বছর বয়সী আলডানা মনে করেন, কাতারে কোন মানুষের পক্ষে স্বাস্থসম্মতভাবে বাঁচা খুব কঠিন। কারণআর কিছুই না, এদেশের প্রথা এবং ঐতিহ্যই এক্ষেত্রে মূল বাঁধা হিসেবে কাজ করছে।
১. কাতারের যেকোনো উদযাপনে প্রচুর চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া হয়। এর মধ্যে থাকে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার, প্রচুর তেলজাতীয় খাবার।
মাংস এবং মিষ্টান্নের নানান পদ থাকে মেন্যুতে। বাড়িতে একজন মেহমান আসলেও সকলের জন্য খাবার তৈরি করাই দেশটির রীতি। ফলে, সকলেই অংশ নেন ভুরি ভোজনে।
২. স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পুষ্টি সম্পর্কে কাতারে সচেতনতা প্রায় নেই বললেই চলে। দেশটির শিশু এবং তরুণদের মধ্যেই অতিরিক্ত ওজন কিংবা স্থূলতার সমস্যা সবচেয়ে বেশি।
কারণ এই বয়সের ছেলেমেয়েরা ফাস্টফুড বেশি খায়। এক্ষেত্রে যদি ছোট ছেলেমেয়ে আছে, এমন পরিবারগুলোকে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পুষ্টি নিয়ে সচেতন করা যায়, সেই সঙ্গে শরীরচর্চার গুরুত্ব বোঝানো যায়, তাহলে স্থূলতা মোকাবেলা সম্ভব।
৩. আলডানা মনে করেন, নানা কারণে কাতারে নারীরা হাইজাম্প কিংবা দৌড়ানোর মত খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে না।
তবে, ক্রমে সমাজের ভেতরে এ নিয়ে মনোভাবে পরিবর্তন আসছে। এখন লম্বা হাতাওয়ালা জার্সি এবং ফুলপ্যান্ট পরে খেলাধুলায় অংশ নিচ্ছে কাতারের মেয়েরা। প্রধান শহরগুলোতে গড়ে উঠছে মেয়েদের জন্য জিম এবং খেলাধুলা শেখানোর বিভিন্ন কোচিং একাডেমী।
বিশ্লেষকেরা দেখেছেন, লোকজনের মধ্যে অলস সময় কাটানো এবং অসচেতনতার কারণে ওজন বৃদ্ধি ঠেকানো যাচ্ছে না। সে কারণে সরকার এই সংকট মোকাবেলায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
ইতোমধ্যে সচেতনতার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হয়েছে। মসজিদের ইমামদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, যাতে তারা ধর্মীয় উদাহরণ ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে মানুষকে উৎসাহী করে তোলেন।
অন্যদিকে, এ বছরের শেষ দিকে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে, কাতারের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ডায়াবেটিস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি