মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী: প্রিয় এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার্থী বন্ধুরা! সালাম ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমতে কাঙ্খিত প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছো। তোমাদের এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষা সন্নিকটে। তাই এ সময়ের প্রস্তুতিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে মনে রাখবে, পরীক্ষার আগে কোনো চাপ নেয়া যাবে না। বরং গত দুই বছরে যা পড়েছো তা ভালোভাবে রিভিশন দিবে। এখন নতুন করে কোনো কিছু না পড়াই উত্তম। আর যেটুকু পড়া হবে তা বারবার লিখে চর্চা করবে। আজ পরীক্ষায় সফলতার জন্য তোমাদের করণীয় সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি পরামর্শগুলো তোমাদের কাঙ্খিত ফলাফল অর্জনে কাজে আসবে।
পাঠ্যবইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব অধ্যায় পড়া হয়েছে কি না তা ভালোভাবে যাচাই করবে।
যদি পড়া হয়ে থাকে তাহলে তা বারবার রিভিশন দিবে। এতে তোমাদের আত্মবিশ্বাস
বৃদ্ধি পাবে।
যে অধ্যায়গুলো ভালোভাবে পড়া হয়নি সেগুলো বারবার পড়তে হবে। তবে এ সময়ে নতুন করে বেশি কিছু পড়ার দরকার নেই।
অতিগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর না দেখে লিখবে। এতে কোনো ভুল থাকলে ধরা পড়বে
ও তোমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এছাড়া পরীক্ষার হলে কীভাবে কত সময়ে উত্তর লিখতে হবে তারও একটি ধারণা পাবে।
বহুনির্বাচনী অংশে কাঙ্খিত নম্বর প্রাপ্তির জন্য পাঠ্যবই গভীর মনোযোগ সহকারে
পড়বে এবং নমুনা প্রশ্নগুলোর উপর চর্চা চালিয়ে যাবে।
এলোমেলোভাবে না পড়ে রুটিন করে পড়াশোনা করবে। যে কয়েক দিন সময় আছে তা
বিষয় অনুযায়ী ভাগ করে নিবে।
যেসব অধ্যায় থেকে পূর্ববর্তী পরীক্ষায় বিভিন্ন বোর্ডে বারবার প্রশ্ন এসেছে সেসব অধ্যায়গুলোর উপর জোর দিবে। প্রয়োজনে টেস্ট পেপারের সহায়তায় নিজেই সাজেশন তৈরি করে নিবে।
বিভিন্ন বিষয়ের গাণিতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বারবার অনুশীলন করবে। কারণ,
গাণিতিক সমস্যাগুলোতে ভালো ফলাফলের জন্য একমাত্র শর্ত অনুশীলন। তাছাড়া
গাণিতিক প্রশ্নের সঠিক উত্তরে পূর্ণ নম্বর পাওয়া যায়।
যে প্রশ্নগুলো বিভিন্ন নামকরা ও সরকারি কলেজে এসেছে, সেগুলো তোমার আয়ত্বে
আছে কি না তা দেখে নিবে এবং আয়ত্বে না থাকলে তা শিখে নিবে।
পরীক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর লিখতে কত সময় লাগবে তা এখনই ঠিক করে নিবে।
বন্টনকৃত সময়ের মধ্যে উত্তর লেখার অভ্যাস করতে হবে, যাতে সে আলোকে পরীক্ষার হলে সকল প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারো এবং সময়ের অভাবে যেন কোনো প্রশ্নের উত্তর লেখা বাদ না পড়ে । তবে রিভিশনের জন্য যেন অন্তত ১০ মিনিট হাতে থাকে সেভাবে
প্রস্তুতি নিবে।
ভয়, জড়তা কিংবা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করবে। কেননা তাতে পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরীক্ষা দুটোই খারাপ হওয়ার সমূহ আশংকা থাকে।
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে রাখবে। আত্মবিশ্বাস ভালো না থাকলে ভালো রেজাল্ট করা যায় না।
বিশ্বাস রাখতে হবে তুমি অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে।
শরীরের সুস্থতার জন্য যত্নশীল থাকবে। কোনো রকম রাগ, ক্ষোভ, অভিমানের চর্চা
পড়াশোনাকে ব্যাহত করতে পারে, এই বিষয়েও সচেতন থাকবে। সুস্থ মন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ
পাঠচর্চা ভালো ফল অর্জনের বড় উপাদান।
সর্বদা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের উপর ভরসা রাখবে। কেননা মহান রবের রহমত ছাড়া কেউ উন্নতি লাভ করতে পারে না। তাঁর রহমত ব্যতিত ভালো ফল করাও সম্ভব নয়। তাই ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে মহান রাব্বুল আলামিনের সাহায্য ও রহমত কামনা করবে।
সর্বোপরি তোমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে ভালো পরীক্ষা দাও। ভালো পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো রেজাল্ট করো, মহান রবের কাছে এই দোয়াই করছি।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাইলস্টোন কলেজ, উত্তরা, ঢাকা।