কাউসার লাবীব: গতকাল ওমর বিন খাত্তাব রা. মসজিদ-মাদরাসা কমপ্লেক্স ব্লক-প মিরপুর-১২ ঢাকাতে মাওলানা মুহাম্মদ সালমানের আহ্বানে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা ও মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয় সাধনের লক্ষে “ইসলামি শিক্ষার রূপরেখা” বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি বায়তুল হামদ ইনস্টিটিউ আমেরিকার প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস এবং শরিয়াহ বোর্ড অফ নিউ ইয়র্কের চেয়ারম্যান মুফতি জামাল উদ্দিন বলেন,
আজকের দুনিয়ায় রাসুল সা. এর প্রতিষ্ঠিত দীনের দুটি অংশের আংশিক প্রচলন আছে। তার মধ্যে একটি হলো আকায়েদ এবং অন্যটি হলো ইবাদাত ।
প্রথমত, আকায়েদের যা কিছু আলোচনা হয় তা পরিপূর্ণ নয়। প্রকৃত পক্ষে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই য়েখানে পরিপূর্ণ আকায়েদ শিক্ষা দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, আমল যার আংশিক প্রচলন আছে। যেমন নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত। বাকি তিনটি মুয়ামালাত মুয়াশারাত ও আখলাক এর শিক্ষা বা আলোচনা হয় না বললেই চলে। যাও রয়েছে তা অপ্রতুল এই অবমূল্যায়নের পেছনে আছে দীনহীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং যুগের চাহিদা পূরণে ধর্মীয় শিক্ষায় প্রয়োজনীয় জাগতিক শিক্ষা না থাকা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে তিন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এক. জেনারেল শিক্ষাব্যবস্থা। দুই. আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও তিন. কওমি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই পরিবর্তনের কারণে শিক্ষা গ্রহণের শুরু থেকেই একদল আরেক দলের প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়ায়। এই আস্থাহীন ও প্রতিপক্ষ মনোভাব দূর করা আমাদের লক্ষ।
ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থাকে একত্রিকরণ করে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করা। যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা আলেম হওয়ার পাশাপাশি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার উকিল হতেও বাধা থাকবে না।
তিনি আরোও বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে গভর্নর ও বিচারক হওয়ার জন্য আলাদা কোনে প্রতিষ্ঠান ছিল না। একই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে মুফতি মুহাদ্দিসের পাশাপাশি গভর্নর ও বিচারক তৈরি হয়েছে। সে কারণেই দেশ ও জাতি বিভাজিত হয়নি। তাই সময় এসেছে এ বিষয়গুলো আমাদের ভেবে দেখার।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন ক. জাতীয় ইসলামি পরিবেশে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা সম্বলিত জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থা, খ. স্কুল মাদরাসার সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা। গ. কর্মজীবি মানুষের জন্য নৈশ মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা এবং ঘ. আফটার; স্কুল মক্তক, আফটার কলেজ মাদরাসা ব্যবস্থা চালু করা যায় কিনা? এখন আমাদের ভেবে দেখার সময় এসেছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, কাশফুল বারী লেখক মুফতি ইদ্রিস কাসেমী, বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদ মিরপুর১২ এর খতিব মুফতি মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, জামিয়ো এমদিাদিয়া মুসলিম বাজার মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আব্দুল ওয়াহেদ কাসেমী, মাদরাসা দারুর রাশাদের শিক্ষাসচিব মাওলানা লিয়াকত আলী, লেখক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ, দুয়ারীপাড়া মাদরাসার মুহাতামিম মাওলানা সৈয়দ আবদুল মজিদ, বড়বাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান, মইনুল কুরআন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুফতি হাবিবুর রহমান ও মুফতি হারুনুর রশিদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আখতারুজ্জামান, মাওলানা হারুনুর রশীদ খান, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা আ. আজিজ নুরী, মুফতি আবুল বাশার নোমানী, মুফতি লোকমান মাজহারী , মুফতি ড. গোলাম রাব্বানী, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আখতারুজ্জামান, মাওলানা নাসরুল্লাহ, মুফতি সামসুদ্দোহা, মুফতি আব্দুল বারী, মুফতি আব্দুল্লাহ মোস্তফা, মাওলানা গোলাম দস্তগীর প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উক্ত মাদরাসা মুহতামিম মুফতি শহীদুল ইসলাম।
‘লন্ডনের মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা আলেমের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারও হচ্ছে’