শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

আসামের মুসলিম দলকে কেন কটাক্ষ সেনাপ্রধানের?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম :  ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল রাওয়াত বুধবার দিল্লিতে এক সেমিনারে ভাষণ দিতে গিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যার প্রেক্ষিতে আলোচনা চলছে কয়েকদিন ধরেই।

সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতে বদরুদ্দিন আজমলের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল এআইইউডিএফ কীভাবে আসামে বিজেপির চেয়েও দ্রুত শক্তি বাড়িয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান।

জেনারেল রাওয়াত বুধবার দিল্লিতে এক সেমিনারে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, "ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধের অংশ হিসেবেই পাকিস্তান উত্তর-পূর্ব ভারতে বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছে - আর সে কাজে তাদের সাহায্য করছে চীন।"

বাংলাদেশ থেকে সুপরিকল্পিতভাবে এভাবে মুসলিমদের পাঠানোর ফলে আসামে যেখানে বছরকয়েক আগেও মাত্র পাঁচটি জেলায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল, এখন সে রাজ্যে আট থেকে নটি জেলা সে অবস্থায় চলে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, "আমার তো মনে হয় না এখন আর সেখানে জনসংখ্যার ডায়নামিক্সে কোনও পরিবর্তন করা সম্ভব বলে। আসামে যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, এই প্রবণতা (মুসলিমদের সংখ্যাবৃদ্ধি) সেখানে ঘটেই চলেছে।"

আর এই প্রসঙ্গেই তিনি টেনে আনেন আসামে মুসলিমদের রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত এআইইউডিএফ-এর জনপ্রিয়তাকে।

এ এআইইউডিএফ দলটি তৈরি হয়েছিল ২০০৫ সালে। এখন ভারতের পার্লামেন্টে তাদের তিনজন এমপি আছেন, আসামের বিধানসভাতেও ওই দল থেকে নির্বাচিত মোট ১৩জন বিধায়ক আছেন।

জেনারেল রাওয়াত বলেন, "এআইইউডিএফ বলে সেখানে একটা দল আছে। এরা কীভাবে শক্তিবৃদ্ধি করেছে যদি দেখেন, তাহলে দেখবেন বিজেপির চেয়েও অনেক দ্রুত গতিতে তাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।"

ভারতীয় সেনাবাহিনী সচরাচর দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ওই আলোচনাসভায় সেনাপ্রধান নিজে যেভাবে দুটি দলের নাম করে তাদের তুলনা করেছেন তা অনেককেই অবাক করেছে।

এআইডিইউএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও এমপি বদরুদ্দিন আজমল সেনাপ্রধানের মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টুইট করেছেন, "শকিং! জেনারেল রাওয়াত তো রাজনৈতিক বিবৃতি দিচ্ছেন!"

তিনি আরও লিখেছেন, "গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দল যদি বিজেপির চেয়ে বেশি ফুলে ফেঁপে ওঠে, তাতে সেনাপ্রধানের কীসের মাথাব্যথা?

"বড় দলগুলোর কুশাসনের জন্যই এআইইউডিএফ বা আম আদমি পার্টির মতো বিকল্প দলগুলোর উত্থান হচ্ছে", মন্তব্য করেছেন মি আজমল।

আসামের কোকরাঝাড় জেলায় বাঙালি মুসলিমদের দাঙ্গাকবলিত একটি গ্রাম (ফাইল চিত্র)
ভারতীয় সেনাবাহিনী অবশ্য এই বিতর্ক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সেনা সূত্রগুলো বলার চেষ্টা করছে, জেনারেল রাওয়াতের মন্তব্যকে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখাটা উচিত হবে না।

তাদের বক্তব্য, সেনাপ্রধান উত্তর-পূর্ব ভারতে অনুপ্রবেশের বিপদ নিয়ে সতর্ক করে দিতে গিয়েই ওই কথা বলেছিলেন।

সেমিনারে জেনারেল রাওয়াত আরও বলেন, "পাকিস্তান খুব পরিকল্পিতভাবে এই (বাংলাদেশী) অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। তারা সব সময় চায় এই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করে ভারতের হাত থেকে তার নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিতে। এই খেলাটা তারা খুব ভাল খেলছে, আর সমর্থন পাচ্ছে উত্তর সীমান্তে চীন থেকে।"

কিন্তু সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে শুধু পাকিস্তান বা চীনকে আক্রমণ করাতেই থেমে থাকেননি - বরং ভারতের ভেতরের রাজনৈতিক দলকেও টেনে এনেছেন - আর সমস্যা তৈরি হয়েছে সেখানেই।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ