সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী
অনুবাদ: মঈনুদ্দীন তাওহীদ ও আবদুল্লাহ জুবায়ের
একটি চমৎকার সময়ে তোমার সাথে আমার দেখা হলো হে আরব দ্বীপ!! আজ তোমার সাথে আমার এমন কিছু কথা আছে যা দীর্ঘদদিন ধরে তোমাকে বলবো বলবো করে হৃদয়ে জমিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু হাজারো ব্যস্ততায় তা বলা হচ্ছিলো না।
তবে আজ আর নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারলাম না। কঠোর দায়িত্ববোধ আমাকে আজ বাধ্য করেছে পুঞ্জিভূত কথাগুলো উদগরণ করতে।
আমি এছাড়া কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।
জানো, এতদিন এ কথাগুলো বলতে আমায় বাধা দিচ্ছিলো আমার চোখ, যা উদাস ভঙ্গিতে দেখছিলো জীবন-ময়দান থেকে তোমার পিছলে পড়াকে। তোমার সেই নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়াকে সুদীর্ঘকাল যাবৎ যা তুমি তোমার কর্তৃত্বে রেখেছিলে।
একুশে বইমেলার সব বই ঘরে বসে পেতে অর্ডার করুন রকমারিতে
সারা বিশ্বে মুসলমানদের উপর যে প্রলয়ংকারী ঝড় বইছে, তা দেখেও তোমার অবাক নিরবতায় হতাশ হয়ে।
তাছাড়া হে আরব দীপ! আমি একথা বলে তোমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ করাতে চাচ্ছিলাম না, যেই তুমি ইতিহাসের দীর্ঘ একটা অধ্যায় আমার কল্যাণে থেকেছিলে। আর এখন আরামের ঘুমে বিভোর তুমি!!
অনেক কষ্ট ক্লেশের পর তুমি অবসন্ন হয়ে ঘুমিয়ে পরেছো। তাই আমি ভাবলাম, হয়তো তোমাকে জাগানো আমার উচিৎ হবে না। এটা আমার সামান্য দয়াই ছিলো তোমার উপর!!
কিন্তু পরে আবার এই ভেবে চকিত হলাম যে নাহ!! ঘুমের চেয়েও আজ গুরুত্বপূর্ণ হলো আমার এই না বলা কথাগুলো তোমাকে বলা। কারণ কি জানো, সত্যি বলছি, আল্লাহর পর একমাত্র তুমি ছাড়া আমার যে আর যাওয়ার কোন জায়গা নেই!!
তাই হে আরব! তোমাকে বলছি, তুমি শোন!!
তেরোশো বছর আগে আমি তোমার বুকেই দেখেছিলাম এক আলোকিত আদর্শ বিপ্লব। যেই সাড়া জাগানো বিপ্লব আমার বিস্তৃত ভূমির প্রতি ইঞ্চি অনুতে বিস্ময়কর প্রভাব বিস্তার করেছিলো।
জানো, আজ আমি বুক ভরা আশা নিয়ে তাকিয়ে আছি দ্বিতীয়বার আরেকটি আদর্শ বিপ্লবের আশে। পূরণ করবে কি আমার এ আকাঙ্ক্ষা?!!
হে আরব! আমি লক্ষ করছি তুমি আজ আমার দিকে একবার লজ্জাবনত নয়নে তাকাও আরেকবার আপনার দিকে হেয় দৃষ্টিতে। তুমিতো আবিস্কার উদ্ভাবনের পথে আমার অগ্রগতি দেখে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও উত্তরোত্তর এটমের এই উন্নতি দেখে কিছুটা লজ্জা আর দ্বিধাজড়িত কণ্ঠে বলো যে, সারা বিশ্ব আজ তোমার আশ্রয় থেকে মুক্ত হয়ে অনেক উন্নতি করেছে। জ্ঞান-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে। তাই না!!!
হে জাজিরা! নিজের উপর কিছুটা সদয় হও! নিজেকে এতটা নিচু মনে করো না!!
কারণ এই উৎকর্ষিত জাতি মানবতার যতটাই উন্নতি সাধন করুক না কেনো প্রকৃতপক্ষে সে তার চরিত্র, সামাজিক আচার-আচরণ দৃষ্টিভঙ্গির কমতি এবং অহেতুক কাজে মত্ত থাকার মত অসঙ্গত কাজে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে!
আহ! তুমি যদি জানতে আসলে এই চাকচিক্যের আড়ালে কি আছে! যদি জানতে মানবিকতা সেখানেই, যেখানে তুমি তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে!
যদি তুমি বুঝতে মানুষ যদিও আকাশে উড়তে পারে, পানিতে সাঁতরাতে পারে কিন্তু সে মাটিতে ঠিকমত হাঁটতে পারে না!
হে জাজিরা! আমি দেখি তোমায়। তুমি অবাক তাকিয়ে থাকো আমার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল অট্টালিকায় সংগঠিত বিদ্যালয়াদির দিকে। সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, উন্নত ছাপাখানা আর তাতে বই ছাপার ধুমের দিকে। এই প্রাচুর্যপূর্ণ সাহিত্যসম্ভারের স্তুপের দিকে। যেনো এগুলো তোমারই অজানা কিছু!
এত অবাক হয়ো না! কারণ পার্থিব সাহিত্যের এসব পাঠ ও পঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো দুনিয়াবি রংতামাশা। অনেক সাহিত্যিকই মানুষের মাঝে সুপ্ত আবেগ আর বিশ্বাস নিয়ে নগ্ন খেলায় মত্ত হয়ে উঠে। কেবল ব্যবসায়িক সার্থে! সমাজে অশ্লীলতা বিস্তারের জঘন্য লালসে!
আচ্ছা, যদি আমি তোমাকে বলি যে এই অধুনা বিদগ্ধ সাহিত্যিক, ঝানু পণ্ডিতরা প্রকৃত আচার ব্যাবহার, জীবন-যুদ্ধে টিকে থাকা কিবা প্রবৃত্তি দমনের মত ক্ষেত্রগুলোয় খুব অগ্রগামী নয়। তাহলে তুমি কি বিস্মিত হবে!?
তুমি তো অধুনা কলামিস্টদের রঙ্গিন লেখনি আর স্বার্থাস্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদদের মুখরোচক কথাবার্তার দিকে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাকিয়ে থাকো। যেন এগুলো বড় ফলপ্রসূ। বাস্তবতা তো এর পুরো উলটো।
অথচ চৌদ্দশত বছর আগে খোদ তুমি এমন সব বাক্যমালা উচ্চারণ করেছিলে, মানুষ মাত্রই ভাবতো এই কথার উপকারিতা যেন তারই!
হায়! কালের বিবর্তনে আজ মানুষের হৃদয়ে শুধু অনর্থক শব্দমালার ঝংকার ধ্বনিত হয়!
আল্লাহ সবাইকে হেদায়াত দিন।
হে জাজিরা!! তুমিতো আমাকে ঈর্ষার চোখে দেখো। তুমি ভাবছো আহ, আমি খুব সুখী।
আমি পরিচ্ছন্ন,সমৃদ্ধ এক শান্তির নীড়। কিন্তু বিশ্বাস করো প্রিয়! আমার ভেতরটা বড় ফাঁপা। আমি এমন একটা অবয়ব যার গোটা সত্ত্বা নকল চর্বিতে আচ্ছাদিত। যার কারণে বোকা লোকগুলো ভাবে, আমি সুস্থ, সুন্দর।
অথচ আমি ব্যাধিগ্রস্থ, মলিন ও তীব্র ব্যথায় কাতর! আমার প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে খুব জ্বালা অনুভূত হয়। কখনো মনে হয় আমি ক্ষুধার যাতনায় মরে যাবো। আবার কখনো মনে হয় অতিভোজে আমার পেট ফেটে যাবে।
আর আমার পাশে যত চিকিৎসক আছে, তারা যেনো ব্যর্থ অস্ত্রপাচার করে আমাকে মারার পায়তারা করছে। তারা ব্যবসার অধঃপতন রোধ করছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে। পণ্যের অবাধ ব্যবহারের খারাপি রোধ করছে সমকাম দিয়ে।
মানুষের উপনিবেশ ঠেকাচ্ছে জাতিগত উপনিবেশ দিয়ে। জালিম পুঁজিবাদদের রুখছে রক্তখেকো সাম্যবাদ দিয়ে। আর এই অন্ধ সাম্যবাদকে দূর করছে খোড়া গণতন্ত্র দিয়ে। তারা এক জুলুমের চিকিৎসা আরেক জুলুমের মাধ্যমে করছে। এক রক্তপাত বন্ধ করতে চাচ্ছে আরেকটা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে।
আর এতে তারা তো আমার রোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমায় আরো দুর্বল করে দিয়েছে!!
হে জাজিরা! আমি আমার সবকিছু তোমার সামনে উজাড় করে, হৃদয়ে সঞ্চিত সব আসরার আর বুকভরা ব্যথা নিয়ে আজ তোমার কাছে এসেছি। তুমি কি আমাকে এতটুকু আশ্রয় দিবে না!?
নিরাময় করবেনা আমার সকল ব্যাধি! যেমনটা আগে করেছিলে, দুর্বিষহ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে!!
বিশ্বাস করো! আজ আমি তোমার সাহায্য আর আশ্রয়ের এতটাই মুখাপেক্ষী যেমনটা তুমি ছিলে একজন রাসূলের সেই আইয়ামে জাহিলিয়্যাতে। আহ! সেদিন তোমার আলোয় আমি হয়েছিলাম ধন্য!
হে আরব! তুমি এতটুকু নিশ্চিন্ত থাকো যে অন্তত আমার দিক থেকে তুমি কোন ধোকার স্বীকার হবে না। এই উৎকর্ষ সভ্যতা, দিগন্তে উড্ডিন ওই বলাকারাজি, গগনচুম্বি সব অট্টালিকা আর এই ভারী ভারী যুদ্ধাস্ত্র যার প্রকম্পিত আওয়াজে শূন্যলোক প্রতিধ্বনিত হয় হরদম।
এরা তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। জানো, এসব কিছু থেকে বিমুখ হওয়া আমার কাছে একদম সহজ! পৃথিবীর এই বিতত ধনভাণ্ডার, ঐশ্বর্য এবং তোমার লুলুপ দৃষ্টির শিকার যা আছে সব আমার কাছে নিতান্তই হেয়!!
আমিতো এই সবকিছুর বিনিময়ে সেই হারানো ঈমানকেই ফিরে পেতে চাই, যা আজ থেকে বহু বছর আগে রাসুলগণ তোমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। যেই ঈমানের সাথে আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার প্রভাবপ্রতিপত্তি, শক্তিসামর্থ্য, ব্যক্তিত্ব ও আমার উত্তাল প্রাণ!! আজতো আমি পানিতে ভাসমান এক অসাড় মৃতদেহ!
হে পবিত্র ভূমি! জেনে রাখো, তোমার জন্যই উৎসর্গিত আমার প্রাণ। কি চাই তোমার!!
তুমি যাও, নিয়ে যাও আমার কাছ থেকে।
আধুনিক এই দ্রুত ধাবমান যানবাহন, তাম্র, হাওয়াই জাহাজ, যান্ত্রিক প্রযুক্তি, অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্র, স্বর্ণপাহার কিবা যাবতীয় সামগ্রী, সব নিয়ে যাও তুমি। কিছুই চাই না আমার। এর বদৌলতে আমাকে শুধু ঐ ঈমানটুকু দাও! যা আমি আমার উন্নত বিতানগুলোতেও পাইনি।
বিরল অনেক কিছুর উদ্ভাবক হওয়া সত্ত্বেও যা আমি নির্গত করতে পারিনি আমার উর্বর ভূমি থেকে। আমার সুদীর্ঘ লিখনি যা অর্জনে অক্ষম। আমার চিন্তা-চেতনা, দর্শন বিদ্যা যে ক্ষেত্রে অপরিপক্ব।
তুমিতো জানো হে আরব! এই ঈমানের ফল্গুধারা এ বিশ্বচরাচরে সেই উম্মিই প্রবাহিত করেছেন, যিনি এখনো তোমার কোলে শুয়ে আছেন! যার কারণে এই মৃত পৃথিবী ফিরে পেয়েছে প্রাণ, অন্ধত্ব উপশম হয়ে, হয়েছে দৃষ্টিবান। থরথর করে কাঁপতে থাকা এ পৃথিবী হয়েছে অনড় অটল।
দেখো, সেই উম্মির বাতলানো পথ ব্যতিত আজ পর্যন্ত কেউ এই ঈমানের ছিটেফোঁটাও পায়নি। আর কস্মিনকালেও তা সম্ভব নয়। আর একারণেই আমি তোমার কাছে ভিখারির বেশে এসেছি হে আরব! আমাকে নিরাশ করোনা! ফিরিয়ে দিওনা আমায়!!
প্রিয় আরব! আমি আজ দিশেহারা। পথহারা। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আমার অভ্যন্তরে গচ্ছিত রাশি রাশি খনিজ, বহরে বহরে রসদ। কিন্তু হায়! আমি জানি না কিভাবে এগুলোর ব্যবহার করতে হয়। আরে, আমিতো এই নশ্বর জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কেই অবগত নই!
এই তামাম জাহানের স্রষ্টা কে! কেনইবা তিনি এসব সৃষ্টি করলেন! কোথায় এর কেন্দ্র, কিইবা এর সঞ্জীবন!!
এই চরাচরের গচ্ছিত শক্তিমূল, সাজসরঞ্জাম সম্পর্কে আমি নিতান্তই অজ্ঞাত। সারা পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত সব কল্যাণকর উপাদেয় সম্পর্কে আমিতো খুব সামান্যই জানি।
জানো, এটাই ধ্রুবসত্য যে এসব কিছুর ব্যাপারে অজ্ঞাত থাকে তার উদভ্রান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। সে বেখবর হওয়ার দরুন এসব উপাদানকে কখনো কল্যাণে, কখনো বা অকল্যাণে আবার কখনো উদ্দেশ্যহীন খরচ করবে। বস্তুত, কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য ও চূড়ান্ত লক্ষ্য তো জানা যাবে একমাত্র রাসূলদের মাধ্যমেই।
বিজ্ঞানী বলো বা বড় বড় আবিস্কারক বলো, তাদের লক্ষ্যতো কেবল নিত্যনতুন আবিস্কার। এক্ষেত্রে যদি ওহীর প্রদর্শিত পথে চলা হতো তাহলে দেখতে এই আবিস্কারের লক্ষ্য ও ফলাফলই হতো অন্যরকম কল্যানের। কিন্তু আফসোস! আমরা ওহীর ধারকরা সেই আবিস্কারের পথকে ছেড়ে দেওয়ায় মানবতার কপালে আজ দুর্ভাগ্যের তিলক লেগেছে!!
হে ঈমানের আঁকড়! হে ওহীর পূণ্যভূমি!! এসো!!! আমরা মানবতার কল্যাণে একসাথে কাজ করি। তুমি এগিয়ে চলো!
ঈমানের বলে বলিয়ান করে, উদ্দেশ্য বাতলে দিয়ে তুমি এই উৎকর্শমান জ্ঞান বিজ্ঞানকে জালেমের নাগপাশ থেকে মুক্তি দাও!
রসদ সম্ভারের ব্যবস্থা করে তুমি দ্বীনকে রেহাই দাও!
দেখো, এমনটা করলে মানবতা চলবে সঠিক পথে। উদ্দেশ্য হবে নিস্কণ্টক! গতিশীল এবং শক্তিশালী।
হে জাজিরা! মুহাম্মদ সা. এর পুণ্যময় জীবনের একটি মুহুর্ত হলেও আমাকে দাও! দেখবে এর দ্বারাই আমি আমার অস্তিত্বের যাবতীয় সমস্যা, সামাজিক হেয়ালিপনা দূর করবো। একেবারে সব!
সেই একটি প্রশ্বাসে আমি আমার মৃতপ্রায় হৃদয়কে জাগিয়ে তুলবো। আর এই মানবতা ও সভ্যতাকে গ্রাসকারী অগ্নিকে এক ফুঁকে নিভিয়ে দিবো। তোমার কি মনে নেই, ইসলামের সেই সোনালিযুগে তোমার একটি ফুঁৎকারে এই বিশ্ব প্রজ্বলন থেকে মুক্তি পেয়ে দেখেছিলো শান্তির পথ।
নবিজীর এ ধরায় আগমনের পর থেকে কালের আবর্তনের ঘুর্ণিপাকে তুমি আজ এমন একটি শ্বাস ছাড়ো যাতে এই পৃথিবী নতুনভাবে জেগে উঠবে। ফিরে পাবে নুতন প্রাণ!
হে আরব!! তুমি আমকে অনেক কিছুই দিয়েছো। তোমার জমিনভরা জ্বালানি পেট্রল দিয়েই হয়তো আমার চলাতে গতি সঞ্চার হয়েছে। সত্যিই আমি তোমার কাছে চিরকৃতজ্ঞ; ঋণী।
তবে আজ আমি তোমার কাছে এমন কিছু চাই হে নবীয়ে রহমতের জন্মভূমি! যা সব সম্পদকে তুচ্ছ করে দেয়। আমি আজ তোমার কাছে এমন কিছুর প্রত্যাশী যা আমার কর্দমাক্ত আড়ষ্ট প্রাণকে গতিময় করবে।
তুমি তোমার একগ্র দৃষ্টি নিবদ্ধ কর আমার দিকে! এই পৃথিবীর অনন্ত পথের অভিযাত্রীদের এই সংকীর্ণ পথ থেকে বের করে মুক্তির রাজপথ দেখাও। যেই পথ দেখাতে অক্ষম হয়েছে দার্শনিকদের দর্শন, আবিস্কারকদের আবিস্কার।
তুমিই পারবে! হ্যাঁ, একমাত্র তুমিই পারবে তাদেরকে বের করতে নববী আদর্শ ঈমান ও রেসালাতের ক্ষমতা বলে। ঐশী শরীয়তের আলোয় ইসলামি হেদায়াতের নির্দেশিকায় তাদের নিয়ে পথ চলো হে প্রিয় আরব!!
পরিশেষে তোমায় একটি কথাই বলবো হে প্রিয় জাজিরা!
তুমি আমারই একটি অংশ। আমার কল্যাণ, অকল্যণ, শ্বাসপ্রশ্বাস সবই তোমাকে স্পর্শ করে। আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তুমি থাকতে পারবে না। তাই শুনে রাখো! যদি তুমি আমার অঙ্গকে শোভিত কর, তাহলে তা তোমার নিজের জন্যই কল্যাণকর।
অন্যথায় তুমি তোমার উপর এবং তোমার অধিবাসীদের জন্য অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত হবে চিরকাল!!
বার্মায় মুসলমানদের করণীয় বিষয়ে ১৯৬১ সালে দেয়া আলি মিয়া নদভীর ভাষণ