যিয়াদ বিন সাঈদ: প্লাবন। লেখালেখির জগতে একযুগ পেরিয়ে আসা লেখক মহিউদ্দীন কাউসারের একটি হাতেগড়া নির্মাণ এটি। এমনই দক্ষ একজন নির্মাতার হাত ধরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে আসছে ঘুণধরা সমাজের অবক্ষয়ের কিছু চিত্রাদি ফুটিয়ে তুলতে এ ‘প্লাবন’। বলা যায় মহা প্লাবন। প্লাবিত পৃথিবীর নিমজ্জিত প্রায় মানুষের হৃদয়ের ঘুর্ণয়ন। বইটি আসছে বর্ষাদুপুর প্রকাশনী থেকে। মহা সমারোহে। দুলতে দুলতে।
মূলত প্লাবন একটি উপন্যাস। এ উপন্যাসের সবচাইতে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, সে সবার চাইতে আলাদা। কিছুটা অন্য পথে চলতে থাকা। একজন বেতনহীন অনারারি মেডিক্যাল অফিসার হচ্ছেন ‘প্লাবন’। তার ভেতরে সবটা সময় চলতে থাকতো সংগ্রামের এক তীব্র জ্বলন। সে ভাল চাইতো নিজের এবং অন্যের। কাছে পেতে চাইতো পৃথিবীর সবাইকেই।
কিন্তু এতোটা সংগ্রামশীলতার পরও তাকে আক্রান্ত হতে হয়েছে সশস্ত্র মৃত্যুর কাছে। নিকৃষ্টভাবে তাকে হত্যা করে ফেলা হয়েছে। তার কাছে অজানাই রয়ে গেছে কার ভুলে তাকে রক্তাক্ত হতে হচ্ছে। হন্তারকদের ভুলেই যে তাকে রক্তের ভেতর লুটোপুটি খেতে হয়েছে, তাও সে জেনে যেতে পারেনি।
লেখক মহিউদ্দিন কাউসার তবুও এর জন্যে দায় নিচ্ছেন। বলছেন, প্লাবনের জন্যে আমি অপরাধবোধে ভুগছি। সমাজব্যবস্থাই এর জন্যে দায়ী। সমাজব্যবস্থাও কেন প্লাবনের জন্যে অপরাধবোধে ভুগবেনা?
সমাজের এ বেহাল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েই মহীউদ্দিন কাউসার নির্মাণ করেছেন ‘প্লাবন’ চরিত্রটি। মুখোশ খুলে দেবার এ প্রচেষ্টা নিশ্চিত তরুণ প্রজন্মকে আলোড়িত করতে পারবে। কষ্টের ভেতর দিয়ে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হবে শুভবোধকে।
লেখক মহিউদ্দিন কাউসার ‘প্লাবন’র মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্মের চিকিৎসকদের অন্দরমহলের গল্পটা বলে দিতে চেয়েছেন। প্রতিধ্বনিত করতে চেয়েছেন সবার মাঝে অনেকের কথাকে। জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন প্রেম। দেখাতে চেয়েছেন দর্শন। আর স্পষ্ট স্বরে বলতে চেয়েছেন সময়ের কথা। সময়ের যত অবক্ষয়, মুখোশের অন্তরালে যত অন্যায় সবকিছুকেই।
মহিউদ্দিন কাউসারের ‘প্লাবন’ চরিত্রটি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলতে সক্ষম হবে। চাপা চাপা কষ্টের অক্ষরে হলেও সত্যটাকে যাচাইবাছাইয়ের মোক্ষম পন্থা বের করে দিবে। লেখকের জন্যে শুভ কামনা।
বইঃ প্লাবন। লেখকঃ মহীউদ্দিন কাউসার
প্রকাশকঃ বর্ষাদুপুর প্রকাশনী। মুদ্রিত মূল্যঃ ১৬০