আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অবিশ্বাসী বা নাস্তিকদের চাইতে ধার্মিক মানুষজন ভিন্ন মতের প্রতি বেশি সহনশীল হন বলে যুক্তরাজ্যের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও স্পেনের ৭৮৮ জনের সাথে কথা বলে দেখা গেছে, নাস্তিক বা অবিশ্বাসী ধর্মহীনেরা নিজেদেরকে ধার্মিকদের তুলনায় বেশি উদার ও সহনশীল মনে করে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা তার উল্টা, ভিন্নমত ও চিন্তার প্রতি শ্রদ্ধা সম্মানের মাত্রা ধার্মিকদের মধ্যেই বেশি।
বেলজিয়ামে ফরাসি ভাষাভাষীদের সবচাইতে বড় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব লুভেইন এর মনোবিজ্ঞান গবেষকদের ভাষ্যমতে, ধর্মীয় চিন্তাধারার মানুষেরা ভিন্নমত বুঝতে আগ্রহী হয় এবং তারা বিরোধী চিন্তাকে বোঝাপড়ার তাগিদ অনুভব করে।
গবেষণাপত্রের সহ-লেখক ফিলিপ উজারেভিক বলেন, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, গোঁড়া ও ধর্মান্ধতা শুধুমাত্র ধার্মিকদেরই ব্যাপার নয় সেটার বাস্তব অবস্থাটা হাজির করা।
সাইপোস্টকে তিনি বলেন, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে সংকীর্ণমনা ও ধার্মিকদের মধ্যে সম্পর্কটা যেখানে থাকে সেটা বিশেষ কোন একটা গোঁড়ামি থেকেই উৎপন্ন হয়।
এবং আজব ব্যাপার হচ্ছে, নিজের মতের ভিন্ন কিছুকে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে নাস্তিকতায় বিশ্বাসীদের চাইতে ধর্মে বিশ্বাসীদের আচরণ অনেক বেশিই সহনশীল হতে দেখা গেছে।
“নাস্তিকেরা কি আসলেই ধর্মান্ধতামুক্ত?” শীর্ষক গবেষণাপত্রে ড. উযারেভিক লিখেছেন, আজকাল কিছু কিছু পশ্চিমা দেশে “ধর্মহীনতাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নেয়া হয়ে থাকে।”
৪৪৫ জন নাস্তিক ও ধর্মহীন, ২৫৫ জন খ্রিস্টান এবং ৩৭ জন বৌদ্ধ-মুসলিম-ইহুদী ব্যক্তির মানসিকতায় মধ্যে তিন ধরনের গোড়ামি লক্ষ্য করেছেন গবেষকেরা।
এতে দেখা গেছে, আত্মস্বীকৃত গোঁড়ামির ক্ষেত্রে অবিশ্বাসীদেরকে কম পাওয়া গেলেও অসহনশীলতার বিবেচনায় তারা সবার উর্ধ্বে।
উজারেভিক বলেন, গবেষণার চিন্তাটা মাথায় আসে কারণ সমাজে দেখা যায়, ভিন্নমতাদর্শের প্রতি ধার্মিক বা কট্টরপন্থিরাও যেমন শত্রুভাবাপন্ন থাকে তেমনি উদার সেকুলার চিন্তাধারার লোকজনও সমান শত্রুতা দেখায় অথচ সবসময় এ ব্যাপারে ধার্মিকদেরকেই সংকীর্ণমনা বলা হয়।
“এমনকি, মনোবিজ্ঞান চর্চায়ও তেমন ব্যাপারটি স্বাভাবিকতায় রুপ নিয়েছে।”
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ধর্মে হোক অথবা ধর্মহীনতায়, ব্যক্তির বিশ্বাসের মজবুতি তার সহনশীলতার মাত্রার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে।সূত্র: ইকনা