আতাউর রহমান খসরু
বার্তা সম্পাদক
উপমহাদেশের মুসলমানের দীনী প্রয়োজনে সৃষ্টি হয়েছিলো কওমি মাদরাসা। ভারতের রাজ্যহারা ও শত্রুর কোপানলে পরা মুসলিম জাতি যখন অস্তিত্বের সংকটে পড়ে, তখন একদল নিবেদিতপ্রাণ আলেম প্রতিষ্ঠা করেন কওমি মাদরাসা সূতিকাগার দারুল উলুম দেওবন্দ।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় দুইশো বছর দারুল উলুম ইসলামি সভ্যতা, সংস্কৃতি ও শিক্ষা এবং মুসলিম জাতির স্বকীয় অস্তিত্ব রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সফলভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে মুসলমানের যে কোনো জাতীয় প্রয়োজনে। বলতে দ্বিধা নেই বর্তমান বিশ্বের উল্লেখযোগ্য দীনি খেদমত তাদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে।
তবে কালপরিক্রমায় এ শিক্ষাব্যবস্থা আজ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তা মোকাবেলায় ব্যর্থ হচ্ছে এধারার অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে, আধুনিকায়ন ও আধুনিক শিক্ষার অন্তর্ভূক্তি, সামাজিক অবস্থান ও সরকারি স্বীকৃতি, ছাত্র-শিক্ষকের নৈতিক স্খলন ইত্যাদি।
কওমি মাদরাসার ইতিহাস ঐতিহ্য এবং আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে একটি চমৎকার গ্রন্থ রচনা করেছেন হাফেজ মাওলানা আজিজুর রহমান জামালপুরী। মৌলভীবাজারের জামিয়া ইসলামিয়া রায়পুরের মুহাদ্দিস এ আলেম লেখক ১৮৬৬ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপট থেকে সাম্প্রতিক সময়ের সরকারি স্বীকৃতি পর্যন্ত সুদীর্ঘ ইতিহাসের নির্যাস তুলে ধরেছেন।
একটি আলোচনাকে দীর্ঘায়িত না করে ছোট পরিসরে তিনি বহুবিধ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। বইটিতে তিনি কওমি মাদরাসার ইতিহাস-ঐতিহ্য, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, দরসে নিজামি ও তার উপযোগিতা, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও তার জন্য গ্রহণযোগ্য প্রস্তাবনা, শিক্ষকের বৈশিষ্ঠ্য, ছাত্রের গুণাবলী ও মাদরাসা পরিচালনার নীতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
বইয়ের শেষাংশে লেখক দৃষ্টান্ত হিসেবে পূর্বসূরী আলেমদের ঘটনাসমূহ উল্লেখ করেছেন। যা বইটিতে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। কওমি মাদরাসা বিষয়কগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে ‘যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কওমি মাদরাসা-শিক্ষা ব্যবস্থা’ প্রসংশার দাবিদার।
লন্ডন প্রবাসী আলেম মাওলানা ফয়জুল হাসান চৌধুরী বইটি প্রকাশের গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন।
ঝকঝটে মলাটের ১০৪ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ১৫০। বইটি পাওয়া যাবে রকমারি.কম, কিতাবঘর ও তোহফা এডুশেন-এ।
এসএস/