অনলাইন ডেস্ক: ব্রেন-স্ট্রোক, হার্ট-স্ট্রোক ও নিউরো প্রভৃতি চিকিৎসাসেবা গরিব অসহায় মানুষের সাধ্যের বাইরে। তার ওপর আবার মুমূর্ষু রোগীর জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হলে তো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চমূল্যে আইসিইউ সেবা অনেকটা দুরূহ বলেই বিনা চিকিৎসায় জীবন প্রদীপ নিভে যায় কারও কারও। আবার কেউ বুঝে-না বুঝে ওইসব প্রতিষ্ঠানে গেলেও পরে সহায়-সম্বল বিক্রি করে চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধ করতে হয়।
তবে দক্ষিণাঞ্চলের গরিব অসহায় মানুষের জন্য লাখ টাকা খরচের আইসিইউ সেবা একেবারে বিনামূল্যে মিলছে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে।
আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. মনিরুজ্জামান জানান, এখানে আইসিইউর সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা রয়েছে।
মুমূর্ষু রোগীর কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কোটি টাকা দামের মনিটর, আল্ট্রাসনো, ইসিজি, ডিসি শক, কার্ডিয়াক মনিটরের ব্যবস্থা রয়েছে।
এখানে অত্যাধুনিক এবিজি মেশিন রয়েছে। যেটা বাইরে খুব ব্যয়বহুল, সেটা খুব অল্প খরচে এখানে করা সম্ভব। রোগীরা জানান, নামিদামি নিউরোলজিস্টদের প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও যাদের সিরিয়াল পাওয়া যায় না সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই এই হাসপাতালে রোগী দেখছেন।
প্রতিদিন বহির্বিভাগে শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। সংকটাপন্ন রোগীর বিষয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
আইসিইউ চালু : মাত্র কয়েক মাস আগেও আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউ সেবা কেন্দ্র ছিল বিরানভূমি।
২০১৪ সাল থেকে প্রায় শত কোটি টাকার আইসিইউর সব ধরনের যন্ত্রপাতি বসানো হলেও চিকিৎসক, নার্স ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে তা চালু করা হয়নি।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হয় আইসিইউ সেবা। বর্তমানে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে পেয়ে খুশি রোগীর স্বজনরা।
বিদেশি আদলে সেবা : চিকিৎসকরা জানান, বিদেশি আদলে এখানে মুমূর্ষু রোগীর কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য মনিটর, আল্ট্রাসনো, ইসিজি, ডিসি শক দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
এ ছাড়া কার্ডিয়াক মনিটর, ভেন্টিনেটরসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-সরঞ্জাম রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. লিপিকা রায় জানান, আমরা বেটার সার্ভিস দিই, যাতে কোনো রোগী মনে না করেন এটা সরকারি হাসপাতালের সাধারণ মানের কোনো চিকিৎসা।
নানা সীমাবদ্ধতা : তবে হাসপাতালটিতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দিন দিন আসন সংকট বাড়ছে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-নার্সদের পদায়ন ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটের কথা জানান হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী।
তিনি বলেন, হাসপাতালের আইসিইউর ১০ বেডের ওপর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাড়ে ৩ কোটি মানুষ নির্ভরশীল। হাসপাতালের সেবার মান বাড়াতে দ্রুত প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদনি।
এসএস/