মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ
প্রিন্সিপাল, মারকাযুত তাকওয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
নবীজি সা. এর ইন্তেকালে হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহ আনহু প্রায় পাগলের মতো হয়ে গেলেন। তিনি ব্যাগ গুছিয়ে কোতায়ও চলে যাচ্ছেন। সাহাবায়ে কেরাম রািদিয়াল্লাহ আনহুগণ তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যে দেশে আমার প্রাণের নবী নেই সেখানে আমি থাকবো না। এরপর তিনি মদিনা থেকে দামেস্কে চলে যান। কিছুদিন পর বেলাল রাদিয়াল্লাহ আনহু স্বপ্নে দেখলেন যে, নবীজি সা. তাকে বলছেন হে বেলাল তুমি আমাকে দেখতে আসছনা কেন? এ স্বপ্ন দেখে তিনি রাসুল সা. এর রওজা সোবারক দেখতে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
হযরত বেলালের আগমনের খবর শুনে মদিনাবাসী আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বেলাল রাদি. ছিলেন রাসুল সা. কর্তৃক নিযুক্ত মুয়াজ্জিন। রাসুল সা. এর ইন্তেকালের পর তিনি আর আযান দেননি। তার কন্ঠে আযান শুনতে সাহাবীরা ব্যাকুল হয়ে আছেন।তাই তাকে আযান দেয়ার অনুরোধ জানালেন। কিন্তু তিনি অপারগতা প্রকাশ করলেন। সাহাবায়ে কেরাম বারবার অনুরোধ করলে দিনি বলেন, আমাকে আযান দিতে বলো না, আমি এটি পারবো না।
কেননা আমি যখন আযান দেই তখন ’আল্লাহু আকবার’ বলার সময় ঠিক থাকি। ’আশহাদু আন লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সময় ঠিক থাকি। কিন্তু ’আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ বলার সময় মসজিদের মিম্বারের বাইরের দিকে তাকিয়ে প্রিয় নবীকে দেখতে পাবো না তখন এটি আমার সহ্যের বাইরে চলে যাবে। তবুও সাহাবায়ে কেরাম বারবার অনুরোধ করলো। পরিশেষে হাসান এবং হোসাইন রা. জোর করলে তিনি আযান দিতে রাজি হন। হযরত বেলাল আযান শুরু করলেন।তার মধুর কন্ঠে আযান শুনে সাহাবায়ে কেরাম নবীজির স্মৃতি স্মরণে কেঁদে ফেললেন।
কিন্তু আযানের মাযেই হযরত বেলাল রাদি. বেহুশ হয়ে পড়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বলেন, ’আল্লাহু আকবার’ বলার সময় ঠিক ছিলাম। ’আশহাদু আন লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সময়ও ঠিক ছিলাম। কিন্তু ’আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ বলার সময় মসজিদের মিম্বারের বাইরের দিকে তাকিয়ে প্রিয় নবীকে দেখতে রনা পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
সুত্র: লেখকের ”পাশ্চাত্যের মোকাবেলায় নববী আদর্শ” বইয়ের ৪৯নং পৃষ্ঠা ।
এসএস/