মুফতি আবদুল্লাহ তামিম : গত শুক্রবার আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার শেষ পাতায় ‘মৃত্যুর পর জীবন অসম্ভব, দাবি বিজ্ঞানীর’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানি অধ্যাপক সেন ক্যারল দাবি করেন, আমাদের এই পার্থিব জীবনের সাথে পরকালের জীবন যাপনের কোন বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা বা সম্পর্ক নেই।
যেমনটা বিজ্ঞানের তৈরি প্লেনে চড়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া যায়। তবে, মানবস্রষ্টা স্বয়ং এ বিষয়ে বলছেন, ‘ওরা কি লক্ষ্য করে না, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্বদান করেন, অতঃপর তা পুনরায় সৃষ্টি করেন? এ তো আল্লাহর জন্য সহজ (কাজ)। (সূরা আনকাবূত-১৯)
তাফসীরে ইবনে কাসীরে বলা হয়, পরকাল সম্পর্কে যারা অস্বীকার করে তাদের লক্ষ্য করে আল্লাহর এই বাণী। প্রথম যখন তাদের কোনো অস্তিতত্ত্বই ছিল না, তখন তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করলেন।
তারপর তারা দেখা, শোনা ও বুঝার ক্ষমতা লাভ করে। পরে যখন আবার মৃত্যুর পর মাটিতে মিশে যাবে এবং বাহ্যিক দৃষ্টিতে কোনই নাম-নিশানা থাকবে না, তখন মহান আল্লাহ সবাইকে পুনর্বার সৃষ্টি করবেন।
এখানে মূলত সৃষ্টির সূচনা ও পরে পুনরুত্থান দিবসের কথা বলা হচ্ছে। তাদের কাছে এ কাজ যতই অসম্ভব মনে হোক না কেন, আল্লাহর কাছে তা নিতান্ত সহজ কাজ।
এর দৃষ্টান্ত দেখার জন্য আল্লাহ অপর আয়াতে বলেন- ‘(হে রাসুল, আপনি) বলুন- পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং অনুধাবন করো কীভাবে তিনি সৃষ্টি আরম্ভ করেছেন? অতঃপর আল্লাহ পুনরায় পরকালীন জগত সৃষ্টি করবেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। (সূরা আনকাবূত-:২০)
এই আয়াতের তাফসীরে বলা হয়, বিশ্ব-জাহানে ছড়িয়ে থাকা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের প্রতি লক্ষ্য কর। পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখ, তাকে কিভাবে বিছিয়ে দিয়েছেন, তাতে পাহাড়-পর্বত নদ-নদী ও সমুদ্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে বিভিন্ন প্রকার ফল-ফসল উৎপন্ন করেছেন।
এ সব কি এ কথার প্রমাণ বহন করে না যে, এ সব সৃষ্টি করা হয়েছে ও এ সবের সৃষ্টিকর্তা কেউ অবশ্যই আছেন?
এত এত কিছু আল্লাহ তায়ালা যদি অনস্তিত্ব থেকে সৃষ্টি করতে পারেন তাহলে তিনি পূনরায় আবার অবশ্যই তাদের পুনোরুত্থিত করতে পারবেন।
আল্লাহ বলেন- নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট,অতঃপর তাদের হিসাব-নিকাশ আমারই দায়িত্ব। (সূরা গাসিয়া-২৫-২৬)