হামিম আরিফ
বিশেষ প্রতিবেদক
তাবলীগ জামাতের দিল্লির মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে ফের বসছেন বাংলাদেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম। ১১ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের আয়েশা মসজিদে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
উলামা মাশায়েখ পরামর্শ সভা নামে এ বৈঠকের নেতৃত্ব দেবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার মহা পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
পরামর্শ সভায় উপস্থিত থাকবেন, হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগের মুহতামিম আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া বারিয়াধার মুহতামিম নূর হোসাইন কাসেমী, জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহতামিম মাওলানা আজহার আলী আনোয়ার শাহ, জামিয়া পটিয়া’র মুহতামিম মাওলানা আবদুল হালিম বুখারী, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মারকাযুশ শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মুফতি রুহুল আমিন, মধুরপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা আবদুর রহমান হাফেজ্জী, মুফতি আরশাদ রাহমানী, খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী প্রমুখ।
জানা যায়, সম্প্রতি দাওয়াত ও তাবলীগের বর্তমান সঙ্কট সমাধানের লক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ পরামর্শ সভা আহ্বান করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিষয়গুলোর সুষ্ঠু সমাধা না হওয়া পর্যন্ত দিল্লির মুরব্বি মাওলানা সাদ আগামী জোড় ও ইজতেমায় যেন না আসতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা হবে।
উলামা মাশায়েখ পরামর্শ সভার আয়োজক টঙ্গী ও উত্তরার আলেম সমাজ। সভা বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটিও করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি মুফতি মাসউদুল করিম এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারীকে।
মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারীরর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি আওয়ার ইসলামকে জানান, তাবলীগের চলমান সঙ্কট দ্রুত নিরসনের পদক্ষেপ নিতেই এ পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম উপস্থিত থাকবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি আলেম উলামা ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে তাতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী জোড় ও বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ আসবেন না।
বাংলাদেশ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লির নিযামুদ্দীনে যাবে, তারা বাংলাদেশের আলেমদের অবস্থান মাওলানা সাদকে জানাবেন। এছাড়াও তাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিনিধি দল দারুল উলুম দেওবন্দে যাবে। সবার সঙ্গে বসে মাওলানা সাদ কান্ধলভী সম্পর্কে দেওবন্দের কী ব্যাখ্যা লিখিত আকারে নিয়ে আসবেন।
চার সদস্যের প্রতিনিধি দল হলো, কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা যুবায়ের আহমদ ও ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং মাওলানা মাহফুজুল হক।
দারুল উলুম দেওবন্দ যদি মাওলানা সাদের প্রতি সমর্থন দেন তাহলে তিনি ইজতেমায় আসতে পারবেন এবং দিল্লির মারকাজ থেকে আহমদ লাটসহ যেসব মুরব্বি চলে গেছেন তাদের সঙ্গে আনতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ৫ সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়েছে যারা কাকরাইলে মারকাজের সঙ্কট নিরসনে কাজ করবেন।
কিমিটিতে রয়েছেন, মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান, আল্লামা আশরাফ আলী, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা আবদুল মালেক ও মাওলানা মাহফুুজুল হক।
এ কমিটি আগামী ১৬ নভেম্বর বাদ ফজর যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন।
মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী বলেন, তাবলীগের সমস্যা দীনের সমস্যা, জাতীয় সমস্যা, এ সমস্যা নিরসনে উলামায়ে কেরাম উদ্যোগী হয়েছেন, এটা কোনো একক দল বা গোষ্ঠীর আয়োজন নয় শীর্ষ আলেমদের আহ্বানেই এ পরামর্শ সভার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।