আবরার আবদুল্লাহ : শায়খুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহযোগিতায় আলেমদের অসামান্য অবদান জাতির সামনে তুলে ধরা আবশ্যক। কেননা এতে আলেমদের সামাজিক অবস্থান ও কাজের পরিধি বিস্তৃত হবে। ভবিষ্যতে ধর্মীয় কাজের ক্ষেত্রও প্রস্তুত হবে।’
আজ ঢাকার হোটেল বাসমতিতে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও উলামায়ে কেরামের অবদান’ শীর্ষক এক ঘরোয়া বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের শুরুতে মাওলানা মামুনুল হক উলামায়ে কেরামের অবদান তুলে ধরে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আগমনের একদম শুরুতে যে মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছিলো তা কাটিয়ে ওঠা গেছে আলেমদের কারণেই। তারা প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো সন্দেহ ছাড়াই বলা যায় এ ক্ষেত্রে আলেমদের অবদান ৯৫ ভাগ।’
তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের বাইরে শুধু মানবিক সেবায়ও আলেমগণ এগিয়ে। খাদ্য, চিকিৎসা, ঘর, টয়লেট ও খাবার পানির কল বসানো পর্যন্ত সব কিছুইতেই আলেমরা অগ্রগণ্য। শুধু যুব মজলিস ২৫০ টয়লেট, ৫০টি কল, ২৫টি মসজিদ, ৫০০ ঘর তৈরি করেছে। কল স্থাপনকারী একটি দল সেখানে ১৫দিন ধরে কাজ করছে। যুব মজলিসের চেয়ে অনেক সংগঠনের কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আর্থিক সংস্থানের কথা চিন্তা করে আলেমরা সেবামূলক কাজে তাদের নিয়োজিত করেছেন। এতে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের কর্মস্থান হয়েছে। এ বাইরো আলেমরা যে মসজিদ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাতেও রোহিঙ্গা আলেমদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে তাদেরও সম্মানজনক কাজের সুযোগ হয়েছে।’
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আলেমগণ সেখানে গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বাংলাদেশের সর্বশ্রেণির মানুষ তাদের উপর আস্থা রেখেছেন বলেই তারা এতো বিশাল একটি মানবিক সেবা দিতে পারছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের জনগণকে মানবিকতার জায়গায় একত্র করেছে। আর এর পুরো অবদান আলেমদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলেমরা বিভিন্ন ব্যানারে কাজ করছেন। কেউ দলীয় ব্যানারে, কেউ মাদরাসার ব্যানারে, কেউ মসজিদের ব্যানারে, কেউ সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে, কেউ কোনো ব্যানারের তোয়াক্কা না করেই নিজ উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় কাজ করছেন।’
মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ আরমানের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, সৈয়দ শামসুল হুদা, আলী হাসান তৈয়ব, তোফায়েল গাজালী, আতাউর রহমান খসরু, সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকার, খালেদ সাইফুল্লাহ, আলাউদ্দিন বিন সিদ্দিক, সুলাইমান সাদী প্রমুখ।
বৈঠকে উপস্থিত আলেম ও সাংবাদিকগণ আলেমদের এ অসামান্য অবদান মিডিয়ায় তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু আলেমগণ ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এক ও অভিন্ন তাই এখানে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ আমাদের নিজস্ব মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে এ বিষয়ে পূর্ণরূপে ব্যবহার করা। সাথে নিজস্ব পরিচয় ও যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে তা মূলধারার মিডিয়াগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা।’
এ সময় তারা এ কাজের স্মারক দেশে ও বিদেশে তুলে ধরার জন্য একটি বেশ কিছু মৌলিক কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তবে পরিকল্পনাগুলো আরও বিচার বিবেচনার পর মিডিয়ার সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন।