মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। মংডুতে গত ২৪ ঘণ্টায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
মংডু থেকে বিবিসির বর্মী বিভাগের সাংবাদিক জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার দুপুরে রোহিঙ্গাদের আটটি কুঁড়েঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার রাতেও আরো ১৫টি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ বলছে,এই দুটো অগ্নিকাণ্ডে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি কারণ সেসময় এই বাড়িগুলো জনশূন্য ছিলো।
সরকারে জারি করা কারফিউর মধ্যেই এসব বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো।
নির্যাতনের কারণে দেশটিতে বহু রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশেই পালিয়ে এসেছে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, মাঝখানে রোহিঙ্গাদের আসা কিছুটা কমে গেলেও সম্প্রতি তাদের আসা আবার বেড়ে গেছে। কক্সবাজারের কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, দিনে দুই থেকে তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে।
শুক্রবার দুপুরে মংডুর নর্থ মিওমা ওয়ার্ড এলাকার আটটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। বলা হচ্ছে, এই এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলমান এবং বৌদ্ধরা একসাথে বসবাস করেন।
মংডুতে ফায়ার সার্ভিস বলছে, কারা আগুন লাগিয়েছে সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায় নি। তবে এবিষয়ে তদন্ত চলছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও মংডুর তিন নম্বর ওয়ার্ডে রোহিঙ্গাদের ১৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এসব বাড়িঘরেও কেউ ছিলো না বলে বিবিসির বর্মী বিভাগের সংবাদদাতা বলছেন। এই এলাকায় শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরই বসতি বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে আগুন নেভাতে তাদের তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগে।
কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, পরে প্রবল বৃষ্টির কারণে আগুন নিভে গেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, কিভাবে এই আগুন লেগেছে তারা তার কারণ খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন।
মিয়ানমারে সেভেন ডে নিউজ নামের একটি সংবাদ সংস্থার ফেসবুকে বৃহস্পতিবারের অগ্নিকাণ্ডের কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে বাঁশ ও বেড়া দিয়ে তৈরি বেশ কয়েকটি বাড়িঘর আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
মংডু সরকারে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে- মিয়ানমার সরকারের এই দবির মধ্যেই এ-দুটো অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, এর ফলে এখনও মংডুতে যেসব মুসলিম রোহিঙ্গা রয়ে গেছে তাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা