আওয়ার ইসলাম : মিয়ানমারের কাছে ভারতের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির বিষয়ে আলোচনা চলছে। মিয়ানমারের নৌপ্রধানের নয়া দিল্লি সফরে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মিয়ানমারের নৌবাহিনী সদস্যদের প্রশিক্ষণের বিষয়েও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।
এমন একটি সময়ে ভারত এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যখন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনা চলছে। ভারতের এই সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গাদের উপর দমন-পীড়নে সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমারের প্রতি নয়া দিল্লির জোরাল সমর্থনের ইঙ্গিত দিচ্ছে
মিয়ানমার নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল তিন অং সান বুধবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং দেশটির সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।দুই পক্ষের মধ্যে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় টহল নৌযান সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয় বলে একজন সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া চার দিনের এই সফরে মিয়ানমারের নৌপ্রধান মুম্বাইয়ে ভারতের নৌজাহাজ নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ভারতের ওই সেনা কর্মকর্তা বলেন, “মিয়ানমার আমাদের পূর্বমুখী নীতির একটি স্তম্ভ এবং সম্পর্কের একটি বড় জায়গা প্রতিরক্ষা।”
নয়া দিল্লি ভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভারতের প্রতিবেশী নীতি বিশেষজ্ঞ কে ইওমে বলছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমালোচনা করছে সে সময় উচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের আনছে ভারত সরকার, এটা একটি বার্তা দিচ্ছে।
“বার্তাটি হচ্ছে, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভারত মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আছে।”
গত মাসে রাখাইনে এই সংকট শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির পাশে দাঁড়ায় নয়া দিল্লি। নিরাপত্তা বাহিনীর উপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার নিন্দা জানায় তারা।
পরে সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক মহল উচ্চকিত হলে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানায় ভারত।
এ বিষয়ে চীনও মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষায় মিয়ানমারের পদক্ষেপকে সমর্থন এবং রাখাইনে সহিংস হামলার প্রতিবাদ জানায় তারা।
আরএম