মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানে প্রায় ৪০০ শতাধিক রোহিঙ্গা হত্যার মতো মানবিক বিপর্যয়কর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মহাসচিব এই গনহত্যা বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে মহাসচিব নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযান থেকে বিরত থাকার এবং এর ফলে যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে তা এড়িয়ে চলার আহবান জানান। এর আগে বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা মিয়ানমার পরিস্থিতি, সহিংসতা ও নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনবিষয়ক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। যদিও এরপর আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি আসেনি। এর দুদিনের মাথায় মহাসচিবের এই বিবৃতি আসল।
অ্যান্তোনিও গুতেরেজ বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের দায়িত্ব দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যেসব এলাকায় সাহায্য প্রয়োজন সেখানে সাহায্য প্রদানকারী সংস্থাকে যেতে দেওয়া।’
মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।
জাতিসংঘের গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ জন সাধারণ নাগরিক।
জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে ২০১২ সালের জুনেও রাখাইন রাজ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছিল। তখন প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ওই সময় দাঙ্গার কবলে পড়ে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। সূত্র-এনটিভি