সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার যে পরিকল্পনায় এগুচ্ছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে বা জিরোলাইনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর ঢল প্রতিদিনই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কয়েক প্রকারে চেষ্টা চালাচ্ছে। করছে নানারকম পরিকল্পনা।

এসব পরিকল্পনার মধ্যে প্রথমত সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে।সে তৎপরতায় সহায়সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমার অংশে একটি 'সেফ জোন' বা নিরাপদ অঞ্চল করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

এইচ টি ইমাম মনে করেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে, এবং সেটা তাদেরই সমাধান করতে হবে বলে। আর সেটি যাতে মিয়ানমার সরকার করে তার জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, জেনেভা, ওয়াশিংটনসহ সব জায়গায় আমাদের রাষ্ট্রদূতরা কাজ করছেন, যাতে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ আসে এবং এটির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের কাছে বাংলাদেশ সেই প্রস্তাব দিয়েছে কিনা, এই প্রশ্নে সরাসরি কোন জবাব মেলেনি। তবে এইচ টি ইমাম বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য এই নিরাপদ জোন তৈরির বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবারও আলোচনা হয়েছে।

ঢাকায় সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর দমন অভিযান চালাচ্ছে এবং সে কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে সীমান্তে পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে এই পটভূমিতে মিয়ানমারে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার বিষয় নিয়ে বুধবার রাতে জাতিসংঘে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু চীনের বিরোধীতার কারণে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির চেষ্টা যেমন বাংলাদেশ করছে, একইসাথে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিকভাবেও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে। এইচ টি ইমাম বলেছেন, দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানের জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমার সরকারের কাছে তিনটি ''গঠনমূলক'' প্রস্তাব দিয়েছে।

"এর মধ্যে রয়েছে যৌথভাবে সীমান্ত পরিদর্শন, এবং সীমান্ত প্রহরা। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যে প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে সেটা হল সশস্ত্র আক্রমণকারী বা জঙ্গী যারা, তাদের বিরুদ্ধে যৌথভাবে বিজিবি এবং দরকার হলে বাংলাদেশ আর্মি এবং বার্মিজরা মিলে একটা অপারেশন করা যেতে পারে।"

তিনি মনে করেন এটা হলে একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগুনো সম্ভব হতে পারে।

সীমান্তের জিরোলাইনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা যে পালিয়ে এসেছে, তাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতিও আহবান জানাচ্ছে ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। তবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ আছে।

কিন্তু তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগের বারেও যেমনটা বলেছিলেন এটার যে মানবিক দিক আছে সেটাও বিবেচনায় নেয়ার বিষয় আছে।

"যারা একেবারে শিশু, কিংবা বৃদ্ধ বা মহিলা- খুব দু:স্থ, এদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ সরকার সবসময়ই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে থাকেন। যেমন বেশ কিছু আহত এসেছেন, যারা গুলিবিদ্ধ, তাদের বাংলাদেশের ভেতরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।"

যে কারণে এবার পুরুষ রোহিঙ্গারা আসছেন না বাংলাদেশে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ