এবারের কুরবানি ঈদ উপলক্ষ্যে এক ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে। হাটগুলোতে বেড়েছে দুম্বা ও উটের কদর। মানুষ আগ্রহ ভরে এসব আরবীয় পশু কিনছে।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর কুরবানির ঈদ। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলিতে গরু, মহিষ, খাসি ও ভেড়ার আমদানি শুরু হয়েছে। কোরবানিতে আরবীয় পশুর চাহিদা মিটাতে হাটে আসছে উট ও দুম্বা। এগুলো আবার বিশেষ অফারে বিক্রি করা হচ্ছে। দুইটি উট একসাথে বিক্রি হচ্ছে ৩০ লাখ টাকায়।
উট ব্যবসায়ী আলী আকবর বলেন, কুরবানিতে আরবীয় পশুর চাহিদা থাকার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখন দেশে উট ও দুম্বার বাণিজ্যিক খামারও শুরু করেছেন খুবই সীমিত আকারে। কুরবানির সময় বেশিরভাগ উট এবং দুম্বা আসছে ভারতের রাজস্থান ও হরিয়ানা প্রদেশ থেকে। বিশেষ করে সীমান্তের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বেনাপোল, বুড়িমারীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে উট ও দুম্বা পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো সেখান থেকে চলে আসছে ঢাকায়। ঢাকা থেকে কিছু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
এর মধ্যে চট্টগ্রামেও এ দুই ধরনের পশু পাওয়া যাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে উট ও দুম্বার খামার এবং গৃহপালিত পশু হিসেবে এগুলোর মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে বেশি জনপ্রিয়। এর বাইরে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারতের রাজস্থান ও হরিয়ানা রাজ্যেও এগুলোর কদর রয়েছে। অত্যধিক তাপমাত্রা সহিষ্ণু বলে গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোর আবহাওয়া এসব পশুর জন্য উপযোগী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় ছোট আকারের একটি উটের খামার রয়েছে। এখানে দুম্বাও পাওয়া যায়। এ ছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকায় ছোট আকারে উটের আরও একটি খামার রয়েছে।
গাবতলির হাটে এনেছেন ১০ থেকে ১৫টি উট এবং ৫টি দুম্বার। এগুলোর মালিক সোহেল রানা অপু। তিনি জানান, আমাদের দেশে কুবানির পশু হিসাবে উট ও দুম্বার জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিনে দিনে। যেকারণে আরব ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয়েছে উটগুলো। উটগুলো ১৫ থেকে ২০ লাখের মধ্যে বিক্রি করা হবে। ১৮০ থেকে ২০০ কেজির মত মাংস হবে একটি উটে। তিনি তিন বছর ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে উট সরবরাহ করে থাকেন। নিজেও ২টি উট লালন পালন করে আসছেন। সোহেল রানা জানান, তার নিজের অন্য ব্যবসা আছে। ঈদকে সামনে রেখে নিজের উটসহ ১৫টি উট নিয়ে গাবতলি পশু হাটে এসেছে।
ইতোমধ্যে ২টি উট বিক্রি করা হয়েছে। হাটে এসব উটের দেখভাল করছেন আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ঈদে প্রতিবছরই উট আনা হয়। এখন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আমদানিও বাড়ছে। হোসেন আলী নামে এক ব্যবসায়ী ১৪টি দুম্বা এনেছেন হাটে। প্রতিটি দুম্বার দাম ৪ লাখ টাকা করে হাঁকা হচ্ছে। একেকটি দুম্বায় ৫৫ থেকে ৬০ কেজি মাংস হবে। উট ও দুম্বাকে খাবার হিসেবে ঘাস ও স্বল্প পানি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বুট ও ছোলাও দেওয়া হয়।