অপহরণের মিথ্যা অভিযোগ ও ‘নাটক’ করার অভিযোগে ফেঁসে যাচ্ছেন কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) এই মামলার তদন্তে পাওয়া তথ্য নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্তে ফরহাদ মজহারকে অপহরণের ঘটনার কোনও সত্যতা না পাওয়া এবং পুলিশকে বিভ্রান্ত ও প্রতারণা করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্ত পুলিশ রিপোর্ট আদালতে দেওয়া হবে। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘ফরহাদ মজহার অপহৃত হওয়ার যে অভিযোগ করেছিলেন, তার কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, বান্ধবী অর্চনাকে টাকা দেওয়ার জন্যই ফরহাদ মজহার অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন। তিনি নিজেই খুলনা গিয়ে স্ত্রীকে ফোন করে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান। এমনকি স্ত্রী ফরিদা আখতারকে বিষয়টি পুলিশকে না জানিয়ে কথিত অপহরণকারীদের চাহিদা মতো টাকাও দিতে বলেন। খুলনায় গিয়ে একটি মার্কেটে ঘোরাফেরা, একটি দোকানে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অর্চনার কাছে টাকা পাঠানো, হোটেলে রাতের খাবার খাওয়া এবং হানিফ পরিবহনের টিকিট কেটে পুনরায় ঢাকায় ফেরার বিষয়গুলো অনুসন্ধান করে ফরহাদ মজহারের অপহরণের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ও নাটক করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ফরহাদ মজহারের অপহৃত হওয়ার বিষয়ে আদাবর থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন তার স্ত্রী ফরিদা আখতার। মিথ্যা মামলা করার দায় তার ওপরেই পড়ার কথা। কিন্তু তদন্ত করে দেখা গেছে, মামলা করার ক্ষেত্রে ফরিদা আখতারের কোনও দায় নেই। তিনি অজ্ঞাতসারে ফরহাদ মজহারের দেওয়া মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। একারণে ফরিদা আখতারের বদলে ফরহাদ মজহারকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’