হাফেজদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে জাতীয় হাফেজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। সংগঠনটির উদ্যোগে আজ রাজধানীতে ৫ প্রবীন ও ১১ তরুণ হাফেজকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। ২০১১ সালে যাত্রার পর সংগঠনটি এবার সাত বছরে পা দিয়েছে। এ পর্যন্ত চারবার শ্রেষ্ট হাফেজদের সংবর্ধনা দিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির পেছনে যিনি শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তিনি হাফেজ মাওলানা নায়েব আলী। ২০০৮ সালে দাওরা (মাস্টার্স) শেষ করেন জামিয়া সিদ্দিকিয়া দারুস সালাম মিরপুর থেকে। এর আগে জামিয়া আরাবিয়া মিরপুর ১২ থেকে হাফেজ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি শ্যামলীর সড়ক জনপদ বিভাগের মসজিদের দায়িত্বে আছেন। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তার স্ত্রীর পরিচালনায় একটি মহিলা মাদরসা এবং কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে রয়েছে একটি হিফজখানা। এগুলোতেও সময় দেন তিনি।
আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথোপকথনে গতকাল তিনি হাফেজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন ও সংবর্ধনা উপলক্ষ্যে জানালেন বিস্তারিত।
আওয়ার ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক রোকন রাইয়ানের সঙ্গে মুঠোফোনে তিনি বলেন, হাফেজদের দেখভাল, দরিদ্র হাফেজদের ব্যয়বহন, অসহায় হাফেজদের চিকিৎসাসহ আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হাফেজদের কল্যাণে কাজ করা সংগঠনটির লক্ষ। গত ৭ বছর ধরে তিনি এটি নিয়ে মেহনত করছেন। বছরে একটি বড় প্রোগ্রাম করলেও সারা বছর হাফেজদের আরও কল্যাণে ছোট ছোট কাজ করেন বলে জানালেন।
হাফেজদের কল্যাণে সংগঠনের কেন প্রয়োজন এমন প্রশ্নে হাফেজ নায়েব আলী বলেন, আইনুল আরেফিন নামের এক হাফেজ দুবাইয়ে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার পর একটা পত্রিকায় সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল। সেখানে তিনি বলেছিলেন আমি বিশ্বে প্রথম হলাম অথচ এয়ারপোর্টে আমাকে নেয়ার মতো বা অভিনন্দন জানানোর মতো কেউ আসেনি।
এই সাক্ষাৎকার পড়ার পর আমার কষ্ট হয়। এসব ছাড়াও হাফেজদের আরও নানারকম সমস্যা রয়েছে। মেধাবী হাফেজদের তেমন একটা কদর করা হয় না। সব চিন্তাকে সামনে রেখে ২০১১ সালে প্রথম ২১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করি আমরা। যা এখন হাফেজদের কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছে।
হাফেজ নায়েব আলী বলেন, এ পর্যন্ত আমরা ৪০-৪৫ জন পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী হাফেজকে সংবর্ধনা দিয়েছি। এটি একটি উৎসাহ যা একজন হাফেজকে তার উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করে। এছাড়াও হাফেজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রবীণ হাফেজদের জন্য কাজ করে। তাদের অবদানের স্বীকৃতিই এর উদ্দেশ্য।
হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন আছে তারাও হাফেজদের নিয়ে কাজ করে, এরপরও আরেকটি সংগঠনের প্রয়োজন কেন? এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিফজের বিশাল পরিসর রয়েছে। প্রতিটি মাদরাসায় আছে হিফজখানা। সবার জন্য কাজ করা একটা সংগঠনের পক্ষে সম্ভব নয়। আরেকটা ব্যাপার হলো কল্যাণমুখী কাজ যতো করা যায় তত ভালো। এর জন্য একাধিক সংগঠন হতে পারে। তবে কারো সাথে আমাদের কাজের সাংঘর্ষিক অবস্থা নেই আলহামদুলিল্লাহ। আমরা সবার সঙ্গে মিলে মিশেই কাজ করি।
বিশ্বসেরা ও প্রবীণ ১৬ হাফেজকে সংবর্ধনা দেবে হাফেজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন