আওয়ার ইসলাম: প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মিনার মসজিদে বসে ছিলাম। এমতাবস্থায় এক আনসারি সাহাবি ও বনি সাকিফ গোত্রের এক লোক এসে রাসূল সা. কে সালাম দিল। তারপর বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ সা. আমরা এসেছি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা যা জানতে এসেছ তা সম্পর্কে আমি কি তোমাদের সংবাদ দেব? যদি তোমরা না চাও তাহলে আমি সংবাদ দেব না।
তারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সা. আমাদের অবহিত করুন।
সাকাফি লোকটি আনসারি সাহাবিকে বললো আপনি প্রশ্ন করুন?
আনসারি সাহাবি বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ সা. আমাকে অবহিত করুন।
রাসূল সা. তাদের (হতবাক) করে দিয়ে বলেন, তোমরা এসেছিলে আমাকে নিচের প্রশ্নগুলো করতে।
১. বাইতুল্লাহর লক্ষ্যে নিজের ঘর থেকে বের হওয়ার ফায়দা কী?
২. তাওয়াফের পর দু’রাকআত নামায পড়ার ফায়দা কী?
৩. সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সা’য়ির ফায়দা কী?
৪. আরাফার ময়দানে অবস্থানের ফায়দা কী?
৫. জামারায় পাথর নিক্ষেপের ফায়দা কী?
৬. মাথা মুণ্ডনের ফায়দা কী?
৭. ফরজ তাওয়াফের ফায়দা কী?
আনসারি সাহাবি বললেন, আল্লাহ আপনাকে সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, আমরা এ প্রশ্নগুলো করার জন্যই এসেছিলাম।
এরপর রাসূল সা. একটা একটা করে উত্তর দিলেন।
১. তুমি যখন বাইতুল্লাহর লক্ষ্যে নিজের ঘর থেকে বের হবে তোমার সওয়ারি পা উঠানো ও নামানোর সাথে আল্লাহ আমলনামায় নেক লিখতে থাকেন এবং গুনাহ মার্জনা করতে থাকেন।
২. তাওয়াফের পর দু’রাকআত নামায পড়ায় বনি ইসমাইলের গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব লিখে দেন।
৩. সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সা’য়ির কারণে সত্তরটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব লিখে দেন।
৪. আরাফার ময়দানে অবস্থান আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলেন, আমার বান্দারা ধূলায় ধূসরিত হয়ে এলোমেলো চুল নিয়ে পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চল হলে জান্নাত লাভের আশায় এসেছে। তাদের গুনাহ যদি বালু রাশি, বৃষ্টির পানি কিংবা সমুদ্রের ফেনাসম হয় তবুও আমি তাদের ক্ষমা করবো। আমার বান্দাহদের ক্ষমার সংবাদ দিয়ে দাও। আর তারা যাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদেরও সংবাদ দিয়ে দাও।
৫. জামারায় প্রতিটি পাথর নিক্ষেপের সাথে সাথে এক একটি কবিরা গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
৬. মাথা মুণ্ডনে প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি পূণ্য লেখা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ হয়।
৭. ফরজ তাওয়াফের সময় তুমি গুনাহমুক্ত। নিষ্পাপ হিসেবে তাওয়াফ করবে। তাওয়াফের সময় একজন ফেরেশতা তোমার কাঁধে হাত রেখে বলে, আল্লাহ তোমার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতের জন্য নেক আমল কর।
মহান আল্লাহ আমাদের হজে মাবরুর নসিব করুন।
‘কাআন্নাকা মাআহু’ গ্রন্থ থেকে অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ আমিমুল ইহসান