দেশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে এবার। অন্যদিকে মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব কুরবানির ঈদও সমাগত।
সুশীল মহলের কেউ কেউ দাবি তুলেছেন কুরবানি না করে এবার সে অর্থ বিতরণ করা হোক বন্যার্তদের মাঝে। এমন দাবির যৌক্তিকতা ও শরিয়তে তার অবকাশ সম্পর্কে কথা বলেছেন খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রবীণ আলেম মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী। আওয়ার ইসলামের পক্ষে তার সঙ্গে কথা বলেছেন জামিল আহমদ।
আওয়ার ইসলাম : দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা চলছে। এমন সময় দুর্গতদের জন্য সাধারণ মানুষের করণীয় কি?
মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী : ইসলাম সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলে। আর যখন দেশে কোনো বিশেষ দুর্যোগ সৃষ্টি হয় তখন মানুষের পাশে দাঁড়ানো মুসলমানের ঈমানি দায়িত্বে পরিণত হয়। রাসুল সা. বলেছেন, প্রতিবেশীকে অভূক্ত রেখে নিজে পেটপুড়ে খেলে সে পুরোপুরি মুমিন দাবি করতে পারবে না। আর এখন বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ খাদ্যসহ নানা প্রকার সমস্যার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। সুতরাং যারা এখনো ভালো আছেন তারা ঈমানি দায়িত্ব মনে করে অন্যের সাহায্য করবেন।
আমি মনে করি, দল, মত ও ধর্ম নির্বিশেষে এখন প্রত্যেক ব্যক্তির দায়িত্ব হলো স্ব স্ব অবস্থান থেকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এটি একটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
আওয়ার ইসলাম : বন্যার্তদের পাশে আমরা কীভাবে দাড়াঁতে পারি?
মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী : বন্যাদুর্গত এলাকার অবস্থা অনুযায়ী যে জিনিস যেখানে বেশি প্রয়োজন তা তাদের নিকট পৌঁছানো। সেটা খাবার, ঔষধ, কাপড় বা অন্যকিছু হতে পারে।
বিয়ের প্রথম দিন থেকেই আমি তাকে সাংসারিক ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করি
তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সমন্বয়। সমন্বয় না হলে দেখা যায় বেশি দুর্গম বা দুর্গত এলাকার মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছায় না।
আওয়ার ইসলাম : সমন্বয় কে করবে?
মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী: সমন্বয় করার মূল দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারের প্রতি যেহেতু মানুষ আস্থা রাখতে পারে না। সরকারি কাজে দলীয় প্রভাব অনেক বেশি তাই দুর্গত এলাকায় কর্মরত সেনাবাহিনী এ সমন্বয়ের কাজটি করতে পারে।
আওয়ার ইসলাম : কিছু লোক বলছে এবার কুরবানী না করে বন্যার্তদের সাহায্য করা হোক। আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী : সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। এখন যদি কারো সামর্ম্য না থাকে তাহলে সে কিভাবে কুরবানি দিবে? বন্যাদুগর্তদের সাহায্য করার জন্য কুরবানি পরিহার করতে হবে কেনো?
আমাদের দেশে যারা বিত্তবান, শিল্পপতি, ধনাঢ্য ব্যক্তি তারা যদি নিজের বিলাসী জীবন-যাপন কয়েকদিন না করেন তাহলেও তো অনেক ত্রাণ সংগ্রহ করা যাবে।
আমি মনে করি, যারা কুরবানি পরিহারে করে বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করার কথা বলছে তাদের মতলব ভালো না।
আওয়ার ইসলাম : কুরবানি করেও আমরা কিভাবে বন্যার্তদের মাঝে সাহায্য করতে পারি?
মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী : সেটা করার বিভিন্ন দিক আছে, সুযোগ আছে। যেমন, কুরবানির পশুর গোশত, চামড়ার টাকা ইত্যাদি বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ। এতে তাদেরও ফায়দা হবে, আমাদেরও দায়িত্ব আদায় হবে।
এটাও হতে পারে যে, তাদের গৃহপালিত পশুগুলো আমরা ক্রয় করে তাদের সাহায্য করি, এতে আমাদের উপকার হবে এবং তাদেরও। তাদের মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হলো না।