তাওহীদ মাদানী, দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত
তাবলিগ জামাতের মতানৈক্য থেকে সৃষ্ট বিশৃংখলা থেকে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে সাময়িকভাবে দেওবন্দের চার দেয়ালে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো তাবলিগের কার্যক্রম৷ এ সিদ্ধান্তের কয়েক দিনের মাথায় নিযামুদ্দীন থেকে এসেছে মাওলানা সা’দ কান্ধলভি হাফিজাহুল্লাহ-এর নতুন রুজুনামা৷ রুজুনামায় সকল প্রকার মতানৈক্য থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। নতুন রুজুনামায় তিনি পূর্বে রুজু না করা বিষয়াদি থেকেও রুজু করেছেন৷
মাওলানা সাদের রুজুনামার বিষয়টি আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন দেওবন্দের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আমিন পালনপুরী৷
রুজুনামা বিষয়ে তিনি বলেন, মাওলানা সাদের রুজুনামা আমাদের হাতে এসেছে, তবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে দেওবন্দ৷ প্রতিটি বিষয়েরই একটা সময় সীমা থাকে৷ সময় পার হওয়ার সেই জিনিস কোনো কাজে আসে না৷ তাই নতুন রুজুনামা এলেই সব সমাধান হয়ে যাবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না৷ তা গ্রহণযোগ্য হতে হবে দেওবন্দের৷
অপরদিকে দেওবন্দের এই সিদ্ধান্ত সামনে রেখে বিভিন্ন ব্যক্তিদের মাঝে মতের ভিন্নতা দেখা গেছে। উর্দু খবরে রোজনামা এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির মতামত প্রকাশ করেছে৷
দেওবন্দে তাবলীগ জামাতের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা
দেওবন্দের পার্শ্ববর্তী এলাকা টাপ্রির চেয়ারম্যান মাওলানা ইয়াহইয়া কারিমী বলেন, দেওবন্দ তার ফায়সালায় নতুনভাবে চিন্তা করুক৷ দেওবন্দ তার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসুক৷ সমস্যা নিরসনে দেওবন্দকেই এগিয়ে আসতে হবে৷
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের আমির আল্লামা খালেদ হারিয়ানী বলেন, যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যাপার৷ অনুরূপ দেওবন্দের ফায়সালাও তার নিজস্ব ব্যাপার৷ দারুল উলুম পুরো বিশ্বের জন্য কল্যাণ কামনা করেই নিয়েছে এ সিদ্ধান্ত৷
দেওবন্দের স্থানীয় ডাক্তার আল্লামা কমারুদ্দীন কাসেমী বলেন, দারুল উলুম সময়েপযোগী সিদ্ধান্তই নিয়েছে৷ পুরো উম্মত পা ফসকে পড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তেই দেওবন্দ সবাইকে হাত ধরে বাঁচিয়েছে৷
তাবলিগের ব্যাপারে চার সিদ্ধান্ত; শীর্ষ আলেমদের বৈঠক
হিমাচল প্রদেশের শিমলা এলাকার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম আল্লামা মুমতাযুদ্দীন কাসেমী বলেন, দেওবন্দ যথাযথ ফায়সালাই নিয়েছে৷ এর চেয়ে উত্তম ফায়সালা আর কী হতে পারে যে, মানুষকে গোমরাহীর পথ থেকে বাঁচাতে গোমরাহীর পথই বন্ধ করে দিয়েছে! যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেওবন্দ৷ পৃথিবীবাসীর উচিত উক্ত ফায়সালা সমর্থন করা৷
বিহার প্রদেশের ইমাম-খতিব ঐক্য পরিষদের আমির মুফতি যাহেদ হুসাইন নুহ বলেন, দারুল উলুম যথাসময়ে যথাযথ ফায়সালাই নিয়েছে৷ দেওবন্দই আমাদের মারকাজ৷ দেওবন্দিয়্যাতই আমাদের জীবন-মরণ৷ তাই দেওবন্দের সকল ফায়সালাও আমাদের অনুসরণীয়৷
দেওবন্দ এলাকার বিশিষ্ট সাংবাদিক মাওলানা সাবের কাসেমী বলেন, দেওবন্দ শুধু হিন্দুস্থান নয় পুরো বিশ্বের মারকায৷ দেওবন্দের ফায়সালা আমাদের অনুসরণীয়৷ দেওবন্দের সিদ্ধান্ত পুরো বিশ্বের সিদ্ধান্ত৷ পুরো বিশ্বের সকল মাদরাসার উচিত কোনো রূপ চিন্তা ফিকির ছাড়াই দেওবন্দের উক্ত ফায়সালার সমর্থন করা৷