রোকন রাইয়ান : প্রযুক্তির এই যোগে দুর্যোগকে যারা সম্পদ বানানোর বিষয়ে গবেষণা করেনি তাদের কাছে বিষয়টি অবাক করার মতোই। কিন্তু শ্রীলঙ্কার একদল গবেষক নতুন এক প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে। যার মাধ্যমে দেশটিতে এখন যত বৃষ্টি তত লাভবান হবে বাসিন্দারা।
নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটির মাধ্যমে বৃষ্টি সংরক্ষণ করে ফসলি জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা হবে দেশটির শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে। সংরক্ষিত পানির সাহায্যে তৈরি হবে বিদ্যুতও।
বাংলাদেশিদের জন্য এ খবর আক্ষেপের। একটু বৃষ্টি হলেই যে ঢাকা-চট্টগ্রাম শহর ডুবে যায়। শ্রীলঙ্কার এ পদ্ধতি এখানে আবিষ্কার করা গেলে কত না বেচে যেতেন বাসিন্দারা।
শ্রীলঙ্কা গত বছর এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। গত মৌসুমে এক বিলিয়ন কিউবেক মিটার পানি সংরক্ষণের টার্গেট করে গবেষক দল। শ্রীলঙ্কার উত্তর ও পূর্বাঞ্চল বছরের অধিকাংশ সময়ই শুষ্ক থাকে। প্রাথমিকভাবে এই অঞ্চলগুলোতে বসানো হয়েছে নব উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি। এর সাহায্যে ২০ মিলিয়ন ফসলি জমি আবাদের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
বিশাল এই প্রজেক্টটিতে খরচ ধরা হয় ৬৭৫ মার্কিন ডলার। শ্রীলঙ্কার সরকার এবং আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই অর্থ যোগান দিচ্ছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য ২৬০ কি.মি. লম্বা দুটি খাল খনন করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার কৃষি ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র সদস্য এস সানমুগাছিয়ানাথ বলেন, বৃষ্টি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বর্ষিত হয়। সব উপায়েই সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নতুন এই প্রযুক্তি থেকে ব্যাপক ফায়দা অর্জনে আশাবাদী।
শ্রীলঙ্কার বার্ষিক গড় বৃষ্টির পরিমাণ ২০০০ মিলি মিটার। তবে এই বৃষ্টির পরিমাণ দেশটির নিম্নাঞ্চলে বেশি। কিন্তু শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টি প্রায় হয় না বললেই চলে। নতুন প্রযুক্তিটি ঠিকঠাকমতো কাজ করলে এখন থেকে শুষ্ক অঞ্চলগুলোও বৃষ্টির পানি পাবে সমানভাবে।
এস সানমুগাছিয়ানাথের মতে, দেশটিতে অল্প সময়ে এত বেশি পরিমাণ বৃষ্টি হয় যাতে কয়েক দিনের মধ্যেই বন্যা দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষের। কিন্তু এই পানি সংরক্ষণ করতে পারলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
বৃষ্টির মৌসুমে উপমহাদেশের অধিকাংশ দেশেই বন্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত বর্ষণের ফলে নদীতে পানি বেড়ে যায়। এতে ঘরবাড়ি হারায় নদী পাড়ের মানুষ। শ্রীলঙ্কার গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন প্রযুক্তিটি অন্যান্য দেশগুলোতে ব্যবহার করা গেলে বাঁচা যাবে এই দুর্ভোগ থেকে।
সূত্র : ডিডব্লিউ উর্দু