অব্যবস্থাপনা আর সমন্বয়হীনতার কারণে বাংলাদেশ থেকে হজগমনেচ্ছু নিবন্ধিত কয়েক হাজার মুসলমানের এ বছর হজ পালন করা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গাফেলতি, ভিসা জটিলতা আর এবং বিমানের সঙ্গে হজ এজেন্সিগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার হজযাত্রী। তাদের অনেকে ঢাকার হজ ক্যাম্পে আটকা পড়ে অনিশ্চয়তার দিন গুণছেন।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, হজ করতে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্যে প্রায় ৭০ হাজার হজযাত্রী এখনও ভিসাই পান নি। ওদিকে হজযাত্রী সংকটের কারণে গত এক সপ্তাহে ২০টির মতো হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। বারবার ফ্লাইট বাতিল বা শূন্য আসন নিয়ে ফ্লাইট যাবার ফলে লোকসান গুণছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান।
এই তুমুল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য হজ এজেন্সিগুলো দুষছে সৌদি কর্তৃপক্ষকে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরব যে নতুন ইলেকট্রনিক বা ই-ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে, তার ফলেই এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।
হজ ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম ও ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে দায়ী করে বক্তব্য দিলেও হজ এজেন্সিগুলো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় সঠিক বক্তব্য প্রদান করেনি।
এদিকে, হজ ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতি, হজযাত্রীদের হয়রানি ও হজ ফ্লাইটে সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় চলছে চরম অব্যবস্থা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত হজ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে একের পর এক। বিমানমন্ত্রী প্রতিদিনই জাতিকে আশার বাণী শোনাচ্ছেন অথচ নিজের মন্ত্রণালয় যে ব্যর্থতার হ্যাটট্রিক করেছে তা বেমালুম ভুলে যান তিনি।’
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি মো. ফয়জুল্লাহ হজগমনেচ্ছুর 'আল্লাহর মেহমান' বলে উল্লেখ করে বলেন, তাদের পবিত্র হজ পালনের পথে সব বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করা হচ্ছে। সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ করা উচিত ও দায়ীদের শাস্তি প্রদান করা উচিত।
হজ অফিস সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। এদের মধ্যে আজ (সোমবার) সকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪৫ হাজার ১৪৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে ২০ হাজার ৮৫৭ জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এবং ২৪ হাজার ২৯১ জন সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
হ্জ পালনের জন্য নির্ধারিত সয়ের মধ্যে বাকী সকলেই পবিত্র ক্বাবা শরীফে সমবেত হতে পারবেন কী না এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন হাজার হাজার হজ গমনেচ্ছু মুসলমান ও তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা। পার্সটুডে